ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম

ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম, এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন আজকের আর্টিকেলে আমরা ফ্রিজ ব্যবহারের কার্যকারী উপায় সমূহ গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।

ওয়ালটন-ফ্রিজ-ব্যবহারের-নিয়ম

এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে আমরা ওয়ালটন ফ্রিজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন দেরি না করে ফ্রিজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম জেনে নিন

ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম

ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম, ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চললে দৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী এবং কার্যকর থাকবে নিচে ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।

ফ্রিজের স্থাপন ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ ফ্রিজটি সঠিক স্থানে রাখার জন্য প্রাথমিকভাবে একটি সমতল জায়গা বেছে নিন এবং এমন জায়গায় রাখুন যেখানে সরাসরি সূর্যলোক আসে না। ফ্রিজের পেছনে এবং পাশে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ইঞ্চি ফাঁকা জায়গা রাখা উচিত যেন বাতাস চলাচল করতে পারে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্রিজের ভিতরে যথাযথভাবে সেট করুন এবং সাধারণত তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হবে। ফ্রিজের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত ডায়াল ও ডিজিটাল সেটিং অনুযায়ী নিয়মিত তাপমাত্রা পরীক্ষা করুন।

খাবার সংরক্ষণের সতর্কতাঃ ফ্রিজে খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। যেকোনো খাবার ঢেকে রাখুন বা সংরক্ষণের জন্য এয়ারটাইট কন্টেইনার ব্যবহার করুন। এতে খাবার দ্রুত শুকিয়ে যাবে না এবং দুর্গন্ধ ছড়াবে না। কাঁচা এবং রান্না করা খাবার একসাথে রাখবেন না কারণ এতে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর ঝুঁকি থাকতে পারে। তাজা শাকসবজি ও ফল সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজের নিচের ড্রয়ার বা সেল ব্যবহার করুন।

ফ্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার করাঃ ফ্রিজের ভিতরে ও বাইরে পরিষ্কার রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাসে একবার ফ্রিজের ভেতরে থাকা তাক ড্রয়ার এবং অন্যান্য অংশ পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কারের জন্য হালকা সাভার এবং কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। পেজের ভেতরে যেন কোন গন্ধ যাবে না থাকে সেজন্য মাঝে মাঝে বেকিং সোডা ব্যবহার করতে হবে। ফ্রিজের বাইরে নরম কাপড় দিয়ে ধুলা পরিষ্কার করুন।

অতিরিক্ত খাবার না রাখাঃ ফ্রিজে অতিরিক্ত খাবার বা জিনিসপত্র রাখা উচিত নয়। এটি ফ্রিজে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রভাব ফেলে এবং ফ্রিজের কম্প্রেসার অধিক চাপের মধ্যে কাজ করে যা দীর্ঘমেয়াদী ফ্রিজের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফ্রিজে গ্যাপ রেখে খাবার রাখতে হবে যাতে ঠান্ডা বাতাস সহজে চলাচল করতে পারে।

দরজা দ্রুত বন্ধ করুনঃ ফ্রিজের দরজা খোলা রাখা উচিত নয়। বরং যত দ্রুত সম্ভব দরজা বন্ধ করার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। বারবার দরজা খোলা ও বন্ধ করলে ভেতরে তাপমাত্রা পরিবর্তিত হয় এবং ফ্রিজের কম্প্রেসার কে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এটি বিদ্যুতেরও অপচয় করে। ফ্রিজ থেকে যা বের করতে চান আগে পরিকল্পনা করে নিন যেন দরজা খোলা সময় কম হয়।

বিদ্যুৎ চলে গেলে সতর্কতাঃ বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্রিজের দরজা বন্ধ রাখুন এবং অযথা খোলা থেকে বিরত থাকুন। ফ্রিজের ভিতরের ঠান্ডা আবহাওয়া এক থেকে দুই ঘন্টা পর্যন্ত ভালোভাবে থাকতে পারে তাই বিদ্যুৎ চলে গেলে দরজা না খোলাই উত্তম। এ ছাড়া বিদ্যুৎ আসার পরে যদি ফ্রিজ নিজে থেকে চালু না হয় তবে ম্যানুয়াল ভাবে সেটিংস পরীক্ষা করে আবার চালু করুন।

ওয়ালটন ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখব

ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম, ওয়ালটন ফ্রিজের জন্য সঠিক পাওয়ার সেটিং নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ফ্রিজের কার্যক্ষমতা এবং স্থায়িত্বকে প্রভাবিত করে। সঠিক পাওয়ার সিটিং ঠিক করতে নিচে কয়েকটি ধাপ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

সঠিক ভোল্টেজের ব্যবহারঃ ওয়ালটন ফ্রিজের জন্য সাধারণত ২২০ থেকে ২৪০ ভোল্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ উপযুক্ত তবে বিভিন্ন মডেলের ফ্রিজে কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। ভোল্টেজ ঠিক রাখতে সার্জ প্রটেক্টর ব্যবহার করা ভালো যা বিদ্যুৎ সংযোগে অতিরিক্ত ভোল্টেজ বা বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলে ফ্রিজকে সুরক্ষিত রাখে।

পাওয়ার স্টাবিলাইজার ব্যবহারের গুরুত্বঃ যেসব অঞ্চলে বিদ্যুতের ভোল্টেজের উঠানামা বেশি হয় সেখানে পাওয়ার স্টাবিলাইজার ফ্রিজের মোটর এবং কম্প্রেসর কে অতিরিক্ত চাপ থেকে রক্ষা করে। এতে ফ্রিজের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত বিদ্যুতের অসামঞ্জস্যতায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ ওয়ালটন ফ্রিজের পাওয়ার সেটিং এর উপর নির্ভর করে ভেতরে তাপমাত্রা ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণত ফ্রিজের তাপমাত্রা তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ফ্রিজের তাপমাত্রা -১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা উচিত। শীতকালে তাপমাত্রা কিছুটা কমানো এবং গরমকালে বাড়ানো দরকার যাতে ফ্রিজের পাওয়ার সঠিক ভাবে বজায় থাকে।

ডোর এলার্ম এবং পাওয়ার এলার্মের গুরুত্বঃ অনেক ওয়ালটন ফ্রিজে ডোর এলার্ম ও পাওয়ার এলার্ম ফিচার থাকে। ফ্রিজের দরজা যদি অনেকক্ষণ খোলা থাকে এবং ডোর এলার্ম ব্যবহার করে তা বন্ধের জন্য সতর্ক করা হয়। পাওয়ার এলার্ম ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুতের ওঠানামার সময় ব্যবহারকারীকে সতর্ক করা হয়। এগুলো ফ্রিজের পাওয়ার সিস্টেমকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করে।

নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণঃ ফ্রিজের পাওয়ার নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত যাতে ফ্রিজটি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা বোঝা যায়। মাসে অন্তত একবার ফ্রিজের পাওয়ার ও তাপমাত্রা সেটিং চেক করা ভালো।
দীর্ঘদিন ব্যবহারে কমপ্রেসর মোটরের উপর বেশি চাপ পড়ে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এই সমস্যা গুলি হ্রাস  করে। এছাড়া কোন সমস্যার ক্ষেত্রে দ্রুত মেরামতের জন্য ওয়ালটনের সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করতে পারেন।

ইকো মোড ও পাওয়ার সেভিং ফিচার ব্যবহারঃ ওয়ালটন ফ্রিজে ইকো মোড বা পাওয়ার সেভিং মোড থাকে যা বিদ্যুৎ খরচ কমায়। এই মোডে ফ্রিজ কম শক্তি ব্যবহার করে ফলে বিদ্যুতের অপচয় কম হয়। এ ফিচারগুলো ব্যবহার করলে ফ্রিজের পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমে যায় এবং মাসিক বিদ্যুৎ বিল হ্রাস পায়।

ওয়ালটন রেফ্রিজারেশনে গ্যাস দেওয়ার নিয়ম

ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম, ওয়ালটন রেফ্রিজারেশনে গ্যাস চার্জ দেওয়া একটি জটিল প্রক্রিয়া। যা যথাযথ দক্ষতা ও সরঞ্জামের. সাহায্য করা উচিত। রেফ্রিজারেশনের কম্প্রেসারে গ্যাসের পরিমাণ কমে গেলে ফ্রিজ যথাযথভাবে ঠান্ডা করতে পারেনা ফলে খাদ্য পণ্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। নিচে গ্যাস চার্জ দেওয়ার কয়েকটি ধাপ উল্লেখ করা হলো।

সঠিক সরঞ্জাম প্রস্তুত করুনঃ গ্যাস চার্জ দিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও গেজ মিটার সংগ্রহ করুন। ফ্রিজের গ্যাস চার্জিং এর জন্য রেফ্রিজারেশন গ্যাস, ভ্যাকুয়াম পাম্প, চার্জিং হাউস, গেজ মিটার এবং গ্যাস সিলিন্ডার প্রয়োজন। এছাড়া সেফটি গ্লাভস এবং গগলস পরিধান করুন কারণ গ্যাস চার্জিং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

লিক চেক করুনঃ ফ্রিজের কম্প্রেসর বা পাইপ লাইনে কোন লিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করা খুবই জরুরী। ফ্রিজের কোথাও যদি লীগ থাকে তবে গ্যাস চার্জ করার পর তা আবার বেরিয়ে যাবে। গ্যাস লিক চেক করার জন্য লিক ডিটেক্টর বা সাবানের পানি ব্যবহার করতে পারেন। লিক থাকলে তা মেরামত করতে হবে।

ভ্যাকুয়াম পাম্পের মাধ্যমে সিস্টেম পরিষ্কার করাঃ লিক না থাকলে প্রথমে ভ্যাকুয়াম পাম্প ব্যবহার করে ফ্রিজের সিস্টেম থেকে সমস্ত বাতাস ও আদ্রতা বের করে নিন। ভ্যাকুয়ামিং করার মাধ্যমে পাইপলাইনের ভেতরে চাপ কমে যায়। এবং এতে কোন বাতাস থাকলে তা বেরিয়ে যায়। ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য ভ্যাকুয়াম পাম্প চালিয়ে নিন এবং নিশ্চিত করুন যে পাইপ লাইন সম্পূর্ণ শুষ্ক।

সঠিক রেফ্রিজারেন্ট নির্বাচনঃ প্রতিটি ফ্রিজের জন্য নির্দিষ্ট রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস প্রযোজ্য। ওয়ালটন বা অন্য ফ্রিজের জন্য ফ্রিজের মডেল অনুযায়ী উপযুক্ত গ্যাস ব্যবহার করুন যেমন R134a, R600a বা অন্য রেফ্রিজারেন্ট সঠিক গ্যাস না হলে ফ্রিজের কার্যকারিতা বিঘ্নিত হতে পারে। ম্যানুয়াল বা ব্যবহার নির্দেশিকায় ফ্রিজের জন্য প্রযোজ্য গ্যাস সম্পর্ক তথ্য পাওয়া যাবে।

গ্যাস চার্জিং প্রক্রিয়াঃ গ্যাস চার্জ করতে গেজ মিটার ও চার্জিং হোস যুক্ত করুন। ফ্রিজ বন্ধ অবস্থায় থাকা উচিত এবং ধীরে ধীরে গ্যাস চার্জ করা উচিত। গেজ মিটারের মাধ্যমে গ্যাসের চাপ পর্যবেক্ষণ করতে থাকুন। এবং সেখানে নির্ধারিত চাপ সাধারণত প্রায় ১০০ থেকে ১৪০ পি এস আই পৌঁছে যাবে তখন গ্যাস চার্জ বন্ধ করুন। গ্যাস সিলিন্ডারের ভল্ভটি ধীরে ধীরে খোলার চেষ্টা করুন যাতে কোন অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।

চার্জিং শেষে পরীক্ষা ও নিশ্চিতকরণঃ গ্যাস চার্জ সম্পন্ন হওয়ার পর ফ্রিজ চালু করুন এবং কয়েক ঘন্টা চলতে দিন। ফ্রিজের কম্প্রেসার ও কুলিং ক্ষমতা পরীক্ষা করুন। ফ্রিজে যদি যথাযথভাবে ঠান্ডা করে তাহলে বুঝতে পারবেন গ্যাস চার্জিং সফল হয়েছে। চার্জিং প্রক্রিয়া শেষে গেজ মিটার ও হোস খুলে ফেলুন এবং ফ্রিজ সুরক্ষিত রাখুন।

ওয়ালটন ফ্রিজের ঠান্ডা না হওয়ার কারণ

ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম, ওয়ালটন ফ্রিজে ঠান্ডা না হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে যা খাবার সংরক্ষণের প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে। সঠিকভাবে ঠান্ডা না হলে ফ্রিজের কার্যকারিতা নষ্ট হয় এবং খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিচে ওয়ালটন ফ্রিজে ঠান্ডা না হওয়ার কয়েকটি কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

কম্প্রেসরের সমস্যাঃ কম্প্রেসর ফ্রিজের হৃদয় বা ফ্রিজের কুলিং সিস্টেম চালু রাখে। কম্প্রেসার যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে ফ্রিজ ঠান্ডা হবে না। ফ্রিজ চালু থাকা অবস্থায় কম্প্রেসার থেকে শব্দ না হলে বৃষ্টি ঠিকমতো ঠান্ডা না হলে বুঝতে হবে কম্প্রেসারে সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে কম্প্রেসার পরীক্ষা বা মেরামতের জন্য টেকনিশিয়ানের সাহায্য নেওয়া উচিত।
ওয়ালটন-ফ্রিজ-ব্যবহারের-নিয়ম
গ্যাস লিক বা কমে যাওয়াঃ ফ্রিজে কুলিং এর জন্য প্রয়োজনীয় রেফ্রিজারেন্ট সঠিক মাত্রায় থাকা জরুরি। রেফ্রিজারেট লিক বা কমে গেলে ফ্রিজের কুলিং ক্ষমতা কমে যায়। কোনভাবে পাইপলাইন বা সংযোগস্থলে লিক থাকলে গ্যাস বেরিয়ে যেতে পারে। লিক চেক করার জন্য বিশেষ লিক ডিটেক্টর ব্যবহার করা হয় এবং প্রয়োজনে নতুন করে গ্যাস চার্জ করে নিতে হয়।

কনডেন্সারের কুন্ডলির সমস্যাঃ ফ্রিজের পেছনে বা নিচে থাকা কন্ডেন্সার কুন্ডলী ঠান্ডা করার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ সরিয়ে দেয়। যদি এই কুণ্ডলীগুলো ধুলা বা ময়লা দিয়ে ঢেকে যায় তবে তাপ ঠিক মতো বের হতে পারে না ফলে কুলিং প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। প্রতি চার থেকে তিন মাসে অন্তর কনডেন্সার কুন্ডলী পুরস্কার করা উচিত যাতে ফ্রিজের কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে।

থার্মোস্ট্যাটের ত্রুটিঃ থার্মোস্ট্যাট ফ্রিজে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক একটি অংশ যার নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পৌঁছালে ফ্রিজের কম্প্রেসর বন্ধ করে দেয়। যদি থার্মোস্ট্যাট সঠিকভাবে কাজ না করে তবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের সমস্যা হতে পারে এবং ফ্রিজ ঠিকমতো ঠান্ডা হতে পারে না। থার্মোস্ট্যাট এ কোন ত্রুটি থাকলে তা পরিবর্তন করা প্রয়োজন।

দরজা সঠিকভাবে বন্ধ না থাকাঃ ফ্রিজের দরজা যদি সঠিকভাবে বন্ধ না থাকে তবে ঠান্ডা বাতাস বাইরে চলে যেতে পারে এবং ভেতরে তাপমাত্রা কমে যাবে না। দরজায় রাবার শীল ভালো অবস্থায় থাকা উচিত যাতে দরজা ভালোভাবে বন্ধ থাকে। শিল নষ্ট হলে তার দ্রুত প্রতিস্থাপন করা উচিত। কারণ এতে ঠান্ডা বাতাস লিক হওয়া বন্ধ হবে এবং ফ্রিজের কুলিং ক্ষমতা সঠিকভাবে বজায় থাকবে।

ওভারলোডিং বা অতিরিক্ত খাবার রাখাঃ ফ্রিজে অতিরিক্ত খাবার রাখলে ঠান্ডা বাতাসের সঞ্চালনে বাধা গ্রস্থ হয়। এতে কুলিং প্রভাবিত হয় এবং ফ্রিজের ভেতরে তাপমাত্রা কমতে পারে না। ফ্রিজে গ্যাপ রেখে খাবার রাখুন যাতে বাতাস ঠান্ডা ঠিকমতো ঘুরতে পারে। এছাড়া কোন ও গরম খাবার সরাসরি ফ্রিজে রাখলে তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং ফ্রিজের কম্প্রেসারের ওপর চাপ পড়ে।

বন্ধ ফ্রিজ চালু করার নিয়ম

বন্ধ থাকা ফ্রিজ আবার চালু করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করা উচিত যা ফ্রিজের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক হয়। সৃষ্টি দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকলে সঠিকভাবে চালু করার মাধ্যমে এর স্থায়িত্ব এবং কর্ম ক্ষমতা উন্নত করা যায়। নিচে বন্ধ ফ্রিজ চালু করার কয়েকটি ধাপ আলোচনা করা হলো।

ফ্রিজ পরিষ্কার করুনঃ ফ্রিজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে প্রথমে ফ্রিজের ভেতরে এবং বাইরে ভালোভাবে পরিষ্কার করা দরকার। ফ্রিজের তাক ড্রয়ার এবং সেলফ আলাদাভাবে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। হালকা সাবান এবং পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে ভেতরের ময়লা দূর হবে এবং খারাপ গন্ধ ও চলে যাবে। ফ্রিজ পরিষ্কার করার পর ফ্রিজের ভেতর শুকাতে দিন যাতে ভেতরে কোন আদ্রতা না থাকে।

ফ্রিজ সঠিক স্থানে রাখুনঃ ফ্রিজ চালু করার আগে এটি সঠিক স্থাপন করুন। এমন স্থানে ফ্রিজ রাখুন যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে না এবং পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল করতে পারে। ফ্রিজের পেছনে ও পাশে অন্তত ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি ফাঁকা জায়গা রাখুন যা ফ্রিজের তাপ বেরোতে সহায়ক হবে। এটি এমন কোন এলাকা হওয়া উচিত যেখানে ফ্রিজ সহজে সংযুক্ত করা যায় এবং বিদ্যুৎ সংযোগ নিরাপদ থাকে।

বিদ্যুৎ সংযোগ পরীক্ষা করুনঃ ফ্রিজ চালু করার আগে বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক মতো রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করুন। বিদ্যুৎ লাইনের ভোল্টের যথাযথ হতে হবে। এবং বিদ্যুৎ সংযোগ কোন সার্জ প্রটেক্টর বা স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা উচিত বিশেষ করে যদি ভোল্টেজের উঠানামা হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ সঠিকভাবে না হলে ফ্রি চালু করলে কম্প্রেসর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ফ্রিজ চালু করে তাপমাত্রা সেট করুনঃ ফ্রিজ পরিষ্কার ও সঠিক স্থানে রেখে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করার পর ফ্রিজ চালু করুন। প্রথমে ফ্রিজের থার্মোস্ট্যাট বা তাপমাত্রা সেটিংস পরীক্ষা করুন এবং উপযুক্ত তাপমাত্রায় সেট করুন। সাধারণত ফ্রিজে তাপমাত্রা তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ফ্রিজের তাপমাত্রা -১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে রাখা উচিত। প্রথমে নিচু তাপমাত্রায় সেট করতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়িয়ে নিতে হবে।

কিছুক্ষণ ফাঁকা চালু রাখুনঃ ফ্রিজ চালু করার পর অন্তত দুই থেকে তিন ঘন্টা ফাঁকা চালু রাখুন যাতে ভেতরে তাপমাত্রা সঠিকভাবে স্থিতিশীল হতে পারে। এই সময়টাতে ফ্রিজের ভেতর কোন ও খাবার রাখবেন না। ফ্রিজের তাপমাত্রা স্থিতিশীল হলে এটি খাদ্য সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত হবে। এটি ফ্রিজের কম্প্রেসর এবং অন্যান্য অংশগুলির জন্য উপযোগী এবং ফ্রিজের সঠিক কুলিং নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

ফ্রিজ কতদিন বন্ধ রাখা যায়

ফ্রিজ কত দিন বন্ধ রাখা যাবে তা নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর যেমন ফ্রিজের ধরন রক্ষণাবেক্ষণের অবস্থান এবং আশেপাশের পরিবেশ। সাধারণত ফ্রিজ কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত বন্ধ রাখা যায় তবে এটি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে যাতে পরবর্তী ব্যবহার এটি ভালোভাবে কাজ করে। নিচে ফ্রিজ দীর্ঘ সময় বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।

আদ্রতা নিয়ন্ত্রণের জন্য শুকনো বস্তুঃ ফ্রিজের ভেতরে দীর্ঘ সময় আদ্রতা জানতে পারে যা দুর্গন্ধ ও ছত্রাকের জন্ম দেয়। তাই ফ্রিজের ভেতরে কিছু শুকনো বেকিং সোডা বা সিলিকা জেল ফেক রাখলে আদ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এটি ফ্রিজের ভেতরে পরিবেশ একে শুষ্ক রাখে এবং ফ্যঙ্গাসের ঝুঁকি কমায়।
নিয়মিত পর্যবেক্ষণঃ ফ্রিজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে প্রতি মাসে একবার অন্তত এটি পরীক্ষা করুন। ফ্রিজের ভেতর বা বাইরের কোন অংশে আদ্রতা ধুলা বা কোন ধরনের ছত্রাকের লক্ষণ থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করুন। এছাড়া দরজা সঠিকভাবে খোলা আছে কিনা এবং ভেতর এ কোন দণ্ডব আদ্রতা জমা হয়েছে কিনা তা দেখে নিন।

পুনরায় চালু করার পদ্ধতিঃ দীর্ঘদিন ফ্রিজ বন্ধ থাকার পর চালু করার আগে কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়। প্রথমে ফ্রিজের দরজা কিছুক্ষণ খোলা রেখে বাতাস চলাচল করতে দিতে হবে এবং ময়লা জমেছে কিনা দেখে নিতে হবে। এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে এবং কয়েক ঘন্টা ফাঁকা চালু রাখতে হবে। তাপমাত্রা সঠিকভাবে স্থির হলে তবে খাদ্যপূর্ণ রাখা যাবে।

পরিবেশের তাপমাত্রা বিবেচনা করুনঃ  ফ্রিজটি যেখানে রাখা হবে সেই স্থানটি তাপমাত্রা ও গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রিজ যদি এমন কোন স্থানে রাগ হয় যেখানে তাপমাত্রা খুব বেশি বা খুব কম তবে এটি বন্ধ অবস্থায় ভেতরের অংশের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে গ্রীষ্মে খুব বেশি গরম পরিবেশে ফ্রিজে রাখলে এর রাবারের গ্যাসকেট শুকিয়ে যেতে পারে। শীতকাল অত্যাধিক ঠান্ডা পরিবেশে ফ্রিজের ভেতরে অংশ আদ্রতা জমতে পারে যা ক্ষতিকর।

দিকনির্দেশনা অনুসরণ করুনঃ ফ্রিজের মডেল অনুযায়ী কোম্পানির নির্দেশিকা মেনে চলা উচিত। বিভিন্ন কোম্পানির ফ্রিজের মডেল অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন রক্ষণাবেক্ষণ এর নিয়ম থাকে। ওয়ালটন ফ্রিজের ক্ষেত্রে ম্যানুয়াল সাধারণত দীর্ঘ সময় ফ্রিজ বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশিকা দেয়া থাকে যা অনুসরণ করলে ফ্রিজের কম্প্রেসার ও অন্যান্য অংশে কোন ক্ষতি হবে না। ফ্রিজ বন্ধ রাখার আগে নির্দেশনা গুলো দেখে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম

ফ্রিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা এর দীর্ঘস্থায়ী কর্ম ক্ষমতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখতে অত্যন্ত জরুরী। নিয়মিতভাবে পরিষ্কার রাখলে ফ্রিজ এর ভেতরে তাজা খাবার ভালো থাকে এবং দুর্গন্ধ ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সমস্যা দূর হয়। ফ্রিজ পরিষ্কারের জন্য নিচে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা হলো।

ফ্রিজ খালি করুনঃ ফ্রিজ পরিষ্কার করার প্রথম ধাপ হল সৃষ্টির সম্পূর্ণ খালি করা। ফ্রিজের ভেতরে থাকা সব খাবার বের করে নিতে হবে এবং সেগুলোর মধ্যে দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে এমন জিনিসগুলো ঠান্ডা স্থানে দ্রুত সংরক্ষণ করতে হবে। ফ্রিজের বিভিন্ন টাক ও ড্রয়ার আলাদা করে বের করে ফেলতে হবে কারণ আলাদা করলে পরিষ্কার করতে সুবিধা হয়। ফ্রিজ খালি করার মাধ্যমে পরিষ্কার প্রক্রিয়াসহ এবং প্রতিটি অংশে পৌঁছানো সম্ভব হয়।

বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করুনঃ ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগেই অবশ্যই এর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এটি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সিরিজ পরিস্কার করার সময় ফ্রিজের ভেতরে গরম পানি বা স্যাঁতস্যাতে কাপড় ব্যবহার করলে কোন ধরনের বৈদ্যুতিক সমস্যা বা দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকলে ফ্রিজের কম্প্রেসর কে অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব হয়।

ভেতরের অংশ পরিস্কার করুনঃ একটি নরম কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে ফ্রিজের ভেতরের অংশ পরিস্কার করুন। ফ্রিজের তাক ও ড্রয়ারগুলো কুসুম গরম পানীয় হালকা ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এবং ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। বেকিং সোডা ও পানি মিশিয়ে ফ্রিজের ভেতরের দেয়াল মুছে ফেলতে হবে। এটি ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়ক। পরিষ্কার করার সময় খেয়াল রাখুন যেন কোন অংশে পানি জমে না থাকে এবং পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।

দরজার রাবার শীল পরিষ্কার করুনঃ ফ্রিজের দরজার রাবার শীল বা গ্যাসকেট অনেক সময় ময়লা জমে বা খাবারের চপ লাগে যাত্রীদের দরজা সঠিকভাবে বন্ধ করতে বাধা সৃষ্টি করে। একটি নরম ব্রাশ বা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন। মৃদু ডিটারজেন্ট বাপি নাগার ব্যবহার করতে পারেন যা ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করবে। রাবার শীল পরিষ্কার রাখলে ফ্রিজের দরজার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হবে এবং ঠান্ডা বাতাস বাইরে বের হতে পারবে না।

ফ্রিজ পুনরায় চালু করুনঃ সবকিছু পরিষ্কার করে শুকানোর পর ফ্রিজটি পুনরায় চালু করার জন্য প্রস্তুত। প্রথমে সব টাক ও ড্রয়ার ও খাবার পুনরায় সাজিয়ে রাখতে হবে। এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে হবে এবং ঠিকমতো সেট করে নিতে হবে তাপমাত্রা। ফ্রিজটি কিছুক্ষণ চালু রাখতে হবে যাতে ভেতরে তাপমাত্রা স্থিতিশীল হয় এবং পুনরায় খাবার সংরক্ষণে প্রস্তুত হয়।

ফ্রিজের কম্প্রেসর নষ্ট হওয়ার কারণ

ফ্রিজের কম্প্রেসর ফ্রিজে শীতলতা বজায় রাখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে খ্রিস্টান্ডা করা বন্ধ করে দেয় ফলে খাবার নষ্ট হতে পারে। কম্প্রেসার নষ্ট হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে যার সময় মতো চিহ্নিত এবং প্রতিরোধ করা গেলে ফ্রিজের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পায়। নিচে ফ্রিজের কম্প্রেসার নষ্ট হওয়ার কয়েকটি কারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

বারবার বিদ্যুৎ উঠানামাঃ ফ্রিজের কম্প্রেসার নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ হলো বিদ্যুতের ভোল্টেজ ওঠানামা। কম্প্রেসার যখন ওঠানামা মুখোমুখি হয় তখন যান্ত্রিক অংশের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে যা দ্রুত ক্ষয় করতে পারে। বিশেষ করে যদি ঘন ঘন চলে যায় এবং আসে তখন কম্প্রেসার শুরু ও বন্ধ হতে থাকে এবং অতিরিক্ত গরম নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে ফ্রিজের একটি ভালো মানের ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা উচিত।
ওয়ালটন-ফ্রিজ-ব্যবহারের-নিয়ম
অতিরিক্ত লোডিংঃ ফ্রিজের ভেতরে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাবার রাখা হয় তাহলে ফ্রিজের ঠান্ডা বজায় রাখতে কম্প্রেসার এর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এভাবে ফ্রিজে অতিরিক্ত লোডিং করলে কম্প্রেসর কে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী কম্প্রেসার এর ক্ষতি করতে পারে। ফ্রিজের ভেতর যেমন পরিমাণ খাবার রাখুন যাতে ফ্রিজে ঠান্ডা বাতাস সহজে ঘুরতে পারে এবং ঠান্ডা করতে কম্প্রেসার কর অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে না হয়।

ত্রুটিপূর্ণ কুলিং ফ্যানঃ ফ্রিজের কনডেন্সার বা কুলিং ফ্যান যদি ঠিকমতো কাজ না করে তবে ফ্রিজের ভেতরে তাপ ঠিকমতো বেরোতে পারে না এতে কম্প্রেসর কে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় যা দীর্ঘ মেয়াদে এটি নষ্ট করার কারণ হতে পারে। কনডেন্সার বা ফ্যানের উপর ধুলা জমলে বা কোন যান্ত্রিক সমস্যা হলে তার দ্রুত ঠিক করা উচিত যাতে ফ্রিজের কুলিং সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করতে পারে এবং কম্প্রেসারের উপর চাপ না পড়ে।

ফ্রিজের দরজা ঠিকমতো বন্ধ না থাকাঃ ফ্রিজের দরজা যদি সঠিকভাবে বন্ধ না হয় বা রাবার সিলিং ফেটে যায় তাহলে ফ্রিজের ভেতরের ঠান্ডা বাতাস বাইরে চলে যায়। ফলে কম্প্রেসর কে বারবার চালু হতে হয় এবং এটি অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে বাধ্য হয়। সঠিকভাবে বন্ধ না থাকলে কম্প্রেসর দ্রুত গরম হয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই দরজার রাবার সিলিং বা গ্যাসকেট নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে এবং দরজা পুরোপুরি বন্ধ আছে কিনা নিশ্চিত করতে হবে।

অনিয়মিত পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণঃ ফ্রিজের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিষ্কার না করলে কমপ্রেসরের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। কনডেন্সারের ধুলা জমা থাকলে বা ফ্রিজের ভেতরে ময়লা জমলে cool system বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে এবং কম্প্রেসার কে বেশি কাজ করতে হয় প্রতি তিন মাস অন্তর ফ্রিজের কনডেন্সার কুলিং ফ্যান এবং কম্প্রেসার পরিষ্কার করলে এটি দীর্ঘমেয়াদে ভালোভাবে কাজ করবে এবং নষ্ট হবার ঝুঁকি কমে।

ফ্রিজ ঘামার কারন কি

ফ্রিজ ঘামানো বা কন্ডেন্সেশন হওয়া একটি সাধারন সমস্যা যা ফ্রিজের বাইরের দিকের উপর আদ্রতা জমে থাকার ফলে ঘটে। এর মূল কারণ হলো তাপমাত্রার পার্থক্য। যখন ফ্রিজের বাইরে তাপমাত্রা ভেতরে তাপমাত্রা থেকে বেশি হয় তখন বাইরে ঠান্ডা অংশে আদ্রতা জমে কন্ডেন্সেশন তৈরি হয় যা পড়ে পানি আকারে বের হয়ে আসে। বিশেষ করে গরম এবং আদ্রতা আবহাওয়ায় এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।

এছাড়া ফ্রিজে দরজা খোলা রাখা কম্প্রেসারের সমস্যা বা ফ্রিজে রাবার সিলিং ফেটে যাওয়ার কারণে বাইরে তাপমাত্রা ভেতরে ঠান্ডার সাথে মিশে কন্ডেন্সেশন হতে পারে। যখন ফ্রিজের দরজা খোলা থাকে তখন ঠান্ডা বাতাস বাইরে চলে যায় এবং বাইরের গরম বাতাস ভেতরে ঢুকে যা আদ্রতা সৃষ্টি করে এবং বাইরে পানি জমে।

আরেকটি কারণ হতে পারে ফ্রিজের ভুল স্থানে রাখা যেমন কোন খুব গরম বা আদ্র স্থানে যেখানে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এছাড়া ফ্রিজের কনডেন্সারভা ফ্যান যদি ময়লা বা ধুলায় আচ্ছন্ন থাকে তাহলে ঠান্ডা বাতাস সঠিকভাবে প্রবাহিত হতে পারে না এবং বাইরের অংশে জমা থাকে ঘাম। এ ধরনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে ফ্রিজে সঠিক তাপমাত্রা নিশ্চিত করা সঠিকভাবে বন্ধ রাখা এবং নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক এর মন্তব্য

ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম, এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করে ফ্রিজ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি আপনার বাসাতে ফ্রিজ ব্যবহার করে থাকেন এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে না থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। এখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু ফ্রিজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এখান থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মাম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url