যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন

যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন, এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন আজকের আর্টিকেলে আমরা ইন্টারনেট সম্পর্কে আলোচনা করব।

যেভাবে মোবাইলে-ইন্টারনেট স্পিড-বাড়াবেন

এছাড়াও আজকের রাতে গেলে আমরা মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নিন কিভাবে মোবাইলের ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর উপায় গুলো কি কি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন জানুন

যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন

মোবাইল ইন্টারনেট স্পিড কমে যাওয়া একটি সাধারন সমস্যা বিশেষ করে যারা বেশি অনলাইনে কাজ করে। যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন এ সম্পর্কে নিজে কিছু কার্যকর উপায় দেওয়া হলো অনুসরণ করলে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানো যাবে।
  • মোবাইলের সেটিং নেটওয়ার্ক মোডটি চেক করতে হবে। যদি ৪জি বা লাইট সাপোর্ট কর তাহলে সে অপশনটি নির্বাচন করতে হবে। পুরানো ২জি বা ৩জি নেটওয়ার্ক স্পিড ধীর হয়ে যাবে।
  • পেছনে চালু থাকা অপ্রয়োজনীয় app ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সেগুলো বন্ধ করলে আপনার ইন্টারনেটের গতি কমে যেতে পারে।
  • মোবাইলে ফার্স্ট ডিএনএস সার্ভার ব্যবহার করতে পারেন যেমন google dns এটি ব্রাউজিং স্পিড বাড়াতে সাহায্য করবে।
  • কখনো কখনো ডাটা কানেকশন বন্ধ করে পুনরায় চালু করলে স্পিড বাড়ে। রিস্টার্ট করলে নতুন ভাবে কানেকশন তৈরি হয়।
  • পুরনো ভার্সনের অ্যাপ বা অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করলে ইন্টারনেট স্পিডে প্রভাব পড়তে পারে। তাই নিয়মিত সেগুলো আপডেট করুন।
  • ব্যবহৃত ব্রাউজারের ক্যাসে ও কুকি নিয়মিত মুছে ফেলুন। বেশি ক্যাশে জমা হলে ব্রাউজারের স্পিড কমে যেতে পারে।
  • নেটওয়ার্ক সিগন্যাল দুর্বল হলে ইন্টারনেট স্পিড কমে যায়। সিগনাল ভাল পাওয়া যায় এমন স্থানে অবস্থান করতে হবে।
  • মোবাইলে সেটিংসে গিয়ে নির্দিষ্ট অ্যাপ গুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এতে প্রয়োজনীয় অ্যাপ গুলোর জন্য বেশি ডাটা পাওয়া যাবে।
  • ব্রাউজারে এড লোড হতে বেশি সময় লাগে যা স্পিড কমিয়ে দেয়। অ্যাড ব্লকার ইন্সটল করলে দ্রুত পেজ লোড হবে।
  • কিছু ব্রাউজার যেমন গুগল ক্রোম এ ডাটা সেভার বা লাইট মোড অপশন চালু করতে হবে। এটি পেজ লোডের সময় ডাটা কম ব্যবহার করে।
  • ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে গোপনীয়তা রক্ষা হয় কিন্তু কিছু ভিপিএন ইন্টারনেট স্পিড কমিয়ে দিতে পারে। অপটিমাইজ ভার্সন ব্যবহার করতে হবে যেমনঃ ফেসবুক লাইট।

মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান

বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ইন্টারনেটের গতি এবং পরিষেবার মান নিয়ে ব্যবহারকারীদের অভিযোগ ও রয়েছে। বাংলাদেশে যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন এ বিষয় সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
  • ওকলা স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে পিছিয়ে। ঘর ডাউনলোড স্পিড ১৫ থেকে ২০ এমবি পি এস এর মধ্যে থাকে যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। উচ্চমানের নেটওয়ার্ক কভারেজ এখনো সারাদেশে সমানভাবে পৌঁছায়নি।
  • শহরে এলাকায় ৪জি নেটওয়ার্ক ভালো হলেও গ্রামীণ এলাকায় সিগনাল দুর্বল। গ্রামীণ এলাকায় ইন্টারনেট গতি কখনো কখনো ৫ থেকে১০ এমবিপিএস এর নিচে নেমে যায়। অপটিক্যাল ফাইবার এবং মোবাইল টাওয়ার উন্নত না হয় গ্রামাঞ্চলে সংযোগের মান কম।
  • মোবাইল ডাটা প্যাকের মূল্য তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় অনেক ব্যবহারকারী পর্যাপ্ত ডাটা কিনতে পারেন না। সীমিত ডাটা প্যাক ব্যবহারের ফলে ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট অভিজ্ঞতা বাধাগ্রস্ত হয়।
  • অনেক মোবাইল অপারেটর পুরনো প্রযুক্তি ব্যবহার করে যা দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক প্রদানের সক্ষম নয়। ফাইভ-জি প্রযুক্তি প্রবর্তনের কথা থাকলো এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। টাওয়ার স্থাপনের জন্য জমির অভাব এবং উচ্চ খরচ বড় প্রতিবন্ধকতা।
  • বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করছে কিন্তু ইন্টারনেট গতি এর উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ এখনো প্রয়োজন। বি টি আর সি বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কে মান উন্নয়নের জন্য নির্দেশনা দিল এর বাস্তবায়ন ধীরগতি।
  • ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু হলে ইন্টারনেট গতিতে বড় ধরনের উন্নয়ন হতে পারে। অপটিক্যাল ফাইবার প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং আর ও মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করা হলে গ্রামীন এলাকা গুলোর নেটওয়ার্ক উন্নত হবে। দক্ষ প্রযুক্তিবিদ এবং উন্নত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইন্টারনেট গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান আর ও ভালো করার সুযোগ রয়েছে।

কি সমস্যার কারণে নেট স্লো হয়

মোবাইল ইন্টারনেট সোলো হওয়ার সমস্যাটি বেশ সাধারণ এবং এটি ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নেট সোলো হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যা ব্যবহারকারী ডিভাইস আরো অন্যান্য কিছু থাকে তাই যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন সে বিষয় নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
  • সঠিক নেটওয়ার্ক সিগন্যাল না পেলে ইন্টারনেট গতি কমে যায়। সিগন্যাল দুর্বল হওয়ার কারণ হতে পারে নেটওয়ার্ক টাওয়ার থেকে দূরত্ব টাওয়ারের সংখ্যা কম থাকা বা অবকাঠামো দুর্বলতা। শহরে তুলনায় গ্রামীন এলাকায় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়।
  • একই নেটওয়ার্ক বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী সংযুক্ত থাকলে ব্যান্ডউইথ ভাগ করে নিতে হয় যা ইন্টারনেট স্লো হওয়ার মূল কারণ। বিশেষ করে পিক আওয়ারে যেমন সন্ধ্যার সময়, নেটওয়ার্কের উপর চাপ বেশি পড়ে।
  • অনেক অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে ডাটা ব্যবহার করে যার নেটওয়ার্কের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই অ্যাপগুলো নিয়মিত আপডেট সিঙ্ক হওয়ার ফলে ইন্টারনেটের গতি কমে যেতে পারে।
  • পুরানো ডিভাইস বা কম্পিটিবল না থাকা ডিভাইস দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করতে পারেনা। ram কম বা প্রসেসর ধীরগতির হলে ব্রাউজিং ও স্ট্রিমিং ধীর হয়ে যায়।
  • অনেক সময় অপারেটরের টাওয়ারগুলোর অবকাঠামো পুরানো বা পর্যাপ্ত সংখ্যক টাওয়ার না থাকার কারণে নেটওয়ার্ক স্লো হয়ে যায়। অপর্যাপ্ত টাওয়ার ব্যবস্থাপনার ফলে নেটওয়ার্কের লোড বেশি হয়, যা গতি কমিয়ে দেয়।
  • বৃষ্টি, ঝড় এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে মোবাইল সিগন্যাল দুর্বল হতে পারে। পাহাড়ি বা গহীন এলাকায় ইন্টারনেট সিগন্যাল পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।

হাই স্পিড ইন্টারনেট

হাই স্পিড ইন্টারনেট বর্তমান সময়ে যোগাযোগ, কাজ এবং বিনোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। উন্নত দেশগুলোতে হাই স্পিড ইন্টারনেট সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে। যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন বাংলাদেশে সে বিষয়গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
যেভাবে মোবাইলে-ইন্টারনেট স্পিড-বাড়াবেন
  • হাই স্পিড ইন্টারনেট বলতে এমন একটি সংযোগ বোঝানো হয় যা ব্যবহারকারীদের উত্তর ডাউনলোড এবং আপলোড স্পিড ব্যবহার করে। সাধারণত ১০০ এমবিপিএস এবং এর বেশি গতি হাই স্পিড ইন্টারনেট হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি ভিডিও স্ট্রিমিং, বড় ফাইল ডাউনলোড এবং অনলাইন গেমিং এর মতো কাজগুলোকে সহজ করে।
  • অফিস বা ঘরে কাজ করার ক্ষেত্রে দ্রুত ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নেটফ্লিক্স বা ইউটিউব আর অন্যান্য স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ফোর কে ভিডিও দেখা সম্ভব হয়ে যায় হাই স্পিডের কারণে। ভার্চুয়াল ক্লাস এবং ওয়েবিনার দ্রুতগতি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজ হয়। বড় ডাটা ফাইল ট্রান্সফার এবং ক্লাউড ভিত্তিক সেবা ব্যবহারে সাহায্য করে।
  • দেশের শহরাঞ্চলে ফাইবার অপটিক ইন্টারনেটের প্রসার ঘটেছে। মোবাইল অপারেটরদের 4g পরিষেবা জনপ্রিয় হলেও ৫জি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। গ্রামীন এলাকা গুলোতে ইন্টারনেট স্পিডের মান উন্নত করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
  • বর্তমান সময়ে সবচেয়ে উন্নত এবং প্রযুক্তি ফাইবার অপটিকস। ফাইভজি নেটওয়ার্ক এটি মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে উচ্চ গতি এবং কম ল্যাটেন্সি সরবরাহ করে। ব্রডব্যান্ড এবং স্যাটেলাইট ইন্টার্নেট শহর এবং গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সরবরাহের দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
  • ফাইবার অপটিক বা ৫জি প্রযুক্তি স্থাপনে অনেক বেশি খরচ হয়। অবকাঠামো এর দিক থেকে বাংলাদেশে এখনো পর্যাপ্ত সংখ্যা টাওয়ার এবং নেটওয়ার্ক অবকাঠামো নেই। গ্রামীন এলাকায় প্রবেশ অধিকারের অভাব যা উচ্চ গতির ইন্টারনেট এখনো গ্রামের অনেক মানুষ এর জন্য স্বপ্ন।
  • ৫জি সেবা প্রসারিত করা এটি বাংলাদেশের ইন্টারনেটের গতিকে নতুন উচ্চতা নিয়ে যেতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে আর ও উন্নত করা সম্ভব। গ্রামাঞ্চলের ইন্টারনেট সুবিধা হাই স্পিড ইন্টারনেটের সুবিধা শহরের পাশাপাশি গ্রামেও পৌঁছে দিতে হবে।

বাংলাদেশ হাই স্পিড ইন্টারনেট

বাংলাদেশ হাই স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহারের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি অন্যান্য এবং কর্মালোচিত দিক রয়েছে যা সাধারণ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। নিচে কিছু দিক তুলে ধরা হলো যা বাংলাদেশ এর হাই স্পিড ইন্টারনেট নিয়ে মানুষের ধারণাকে বিস্তৃত করবে
  • মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের ডাটা প্যাক সরবরাহ করলেও একই ব্যান্ডউতে বিভিন্ন স্পিড দিয়ে থাকে। উচ্চমূল্যের প্যাকেজ ব্যবহারকারীরা ঘরে ২০ থেকে ৩০% বেশি স্পিড ব্যবহার করে থাকেন। গ্রামীন এবং শহরের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এই ব্যান্ডউইথ বিভাজনের প্রভাব ভিন্ন হয়। শহরে থাকা গ্রাহকরা তুলনামূলক বেশি গতি পান।
  • বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সাবমেরিন কেবল ১ এবং সাবমেরিন ক্যাবল দুই থেকে আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথ পায়। এই ক্যাবলের মাধ্যমে ভালো ব্যান্ডউইথ পাওয়া সম্ভব হলেও রক্ষণাবেক্ষণে উচ্চ ব্যয় এবং কারিগরি জটিলতা রয়েছে। সাবমেরিন কেবল ৩ যোগ হলে হাই স্পিড ইন্টারনেট এর আরো বিস্তৃত সম্ভব হবে।
  • বাংলাদেশে বড় ইন্টারনেট সেবা দাদারা ক্যাসিং সার্ভার ব্যবহার করে এর জনপ্রিয় ওয়েবসাইট গুলোর কনটেন্ট লোকাল নেটওয়ার্কে সংরক্ষণ করেন। এর ফলে গ্রাহকের জন্য নির্দিষ্ট কনটেন্ট দ্রুত লোড হয়। তবে এটি কেবল জনপ্রিয় কন্টেন্টের জন্য প্রযোজ্য তাই অন্যান্য কম ব্যবহৃত ওয়েবসাইটের জন্য স্পিড তুলনামূলক কম হতে পারে।
  • বাংলাদেশের হাই স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা প্রায় লো ল্যাটেন্সি সংযোগ পান না। যদিও ডাউনলোড স্পিড ১০০ এমবিপিএস পর্যন্ত পৌঁছায় গেমিং বা লাইভ স্ট্রিমিং এর মত কাজে লেটেন্সি বেশি প্রয়োজন থাকার কারণে অভিজ্ঞতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সমস্যার সমাধানের মাল্টি ফাইবার সংযোগ এবং উন্নত ডাটা সেন্টার তৈরি প্রয়োজন।
  • বাংলাদেশে বেশিরভাগ ব্যবহারকারী মোবাইল ব্রড ব্যান্ডের উপর নির্ভর করে যার তুলনামূলক কম ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে। তবে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড যেমন ফাইবার অপটিক ব্যবহারকারীরা প্রতি সেকেন্ডে ১ জিবিপিএস পর্যন্ত স্পিড পেতে পারেন। সমস্যাটি হলো ফিক্সড ব্রড ব্যান্ডের সম্প্রসারণ শহরের বাইরে  খুব ধীরগতিতে হচ্ছে যেখানে এর চাহিদা বাড়ছে।
  • স্থানীয় স্টার্টআপরা কম খরচে ফাইবার ভিত্তিক ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করার জন্য কাজ করছে। উদাহরণস্বরূপ কিছু স্টার্ট আপ ব্যবহারকারীদের জন্য ডেডিকেটেড ব্যান্ডেজ সরবরাহ করতে যেখানে নির্দিষ্ট সময় দ্রুত গতি নিশ্চিত করা হয়। বাংলাদেশের সরকারি প্রকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশ এর অধীনে গ্রামীণ এলাকায় ইন্টারনেট সুবিধা সম্প্রসারণ এর জন্য স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন যেভাবে

মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল নেটওয়ার্ক সিগন্যাল শক্তিশালী করা। দুর্বল সিগন্যালের কারণে ইন্টারনেটের গতি কমে যায়। । টাওয়ার থেকে দূরে থাকলে বা সিগন্যাল বাধাগ্রস্ত হলে ডাটার স্থানান্তর ধীর হয়ে যায়। এই সমস্যার সমাধানে এমন স্থানে অবস্থান করতে হবে যেখানে নেটওয়ার্ক শক্তিশালী। প্রয়োজনের ফোনটি এয়ারপ্লেন মোডে রেখে কয়েক সেকেন্ড পরতা বন্ধ করতে হবে। এটি সিগন্যাল রিফ্রেস করে এবং ভালো কানেকশন পেতে সাহায্য করে।
মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর আরেকটি কৌশল হলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান অ্যাপ গুলো নিয়ন্ত্রণ করা। অনেক সময় নির্দিষ্ট অ্যাপগুলো ডাটা ব্যবহার করে যা ইন্টারনেটের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ফোনের সেটিংস এ গিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা সীমিত করতে হবে এবং শুধু প্রয়োজনীয় অ্যাপ গুলোর জন্য ডাটা ব্যবহার চালু রাখতে হবে। এটি না শুধুমাত্র ইন্টারনেট গতি বাড়াবে এবং ডাটার সঞ্চয় করবে।

ইন্টারনেট ব্রাউজার বা অ্যাপ যদি অপটিমাইজ না হয় তাহলে এটি ধীরগতির ইন্টারনেটের প্রধান কারণ হতে পারে। মোবাইলে একটি লাইট ওয়েট ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে যেমন গুগল ক্রোমের লাইট মুড। একই সাথে ফেসবুক লাইট বা মেসেঞ্জার লাইট এর মত হালকা ভার্সনের অ্যাপ ব্যবহার করলে ডেটা খরচে কমে এবং স্পিড বাড়ে।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গতিতে শীর্ষ দেশ

বিশ্বব্যাপী উচ্চগতির ইন্টারনেটের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে কিছু দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গতিতে শীর্ষ অবস্থান করছে। নিচে কয়েকটি দেশে তুলনা দেওয়া হল।
  • সিঙ্গাপুর দীর্ঘদিন ধরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গতিতে শীর্ষ অবস্থান করছে। এখানে গড় ডাউনলোড স্পিড প্রায় ১৯০ এমবিপিএস যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। সরকারের সক্রিয় নীতি এবং উন্নত ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক তাদের সাফল্যের মূল কারণ।
  • চীনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং ৫জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ফলে ইন্টারনেট গতি উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে ডাউনলোড স্পিড ১৬০ এমবিপিএস ছাড়িয়েছে। তাদের ব্রডব্যান্ড অবকাঠামো উন্নত করার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের জন্য সাশ্রয়ী প্যাকেজ সরবরাহ করা হয়।
  • দক্ষিণ কোরিয়া ইন্টারনেট স্পিডে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। গড় স্পিড প্রায় ১৫০ এমবিপিএস এবং তারা প্রথম 5g চালু করে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট শুধু শহরে নয়। প্রত্যন্ত এলাকাতেও পৌঁছে দিতে তারা ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে।
  • হংকং এর ইন্টারনেট অবকাঠামো উন্নত অত্যন্ত। গড় ডাউনলোড স্পিড প্রায় 145 এমবিপিএস যা তাদেরকে শীর্ষস্থানে নিয়ে এসেছে। সরকারের উন্নয়নমূলক নীতি এবং বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
  • যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চগতির ইন্টারনেট স্পিড শহরাঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। গড় স্পিড প্রাইস ১৩০ এমবিপিএস এবং বড় শহরগুলোতে ফাইবার অপটিক প্রযুক্তি সাধারণ হয়ে উঠেছে। অনেক আইএসপি নির্দিষ্ট এলাকা গুলিতে গিগবিট স্পিড সরবরাহ করছে।
  • সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফাইবার অফ দিগ নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হাওয়ায় গতি অত্যন্ত ভালো। গড় স্পিড প্রায় ১২০ এমবিপিএস এবং উন্নত নেটওয়ার্ক কভারেজ সারাদেশে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ দেশটি উচ্চমানের ডিজিটাল পরিষেবা এবং স্মার্ট সিটির ধারণা বাস্তবায়নে অগ্রণী।

ওয়াইফাই স্পিড কত হলে ভালো

ওয়াইফাই স্পিড এর মান নির্ভর করে আপনার ইন্টারনেট ব্যবহারের ধরন এবং প্রয়োজনের উপর। সাধারণ ব্রাউজিং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার বা ইমেইল চেক করার জন্য পাস থেকে ১০ এমবিপিএস স্পিড যথেষ্ট। তবে যদি আপনি স্ট্রিমিং, অনলাইন গেমিং বা বড় ফাইল ডাউনলোড করতে চান তাহলে অন্তত ২৫ থেকে ৫০ এমবিপিএস স্পিড প্রয়োজন। গৃহস্থালি ব্যবহারকারীদের জন্য ১০০ এমবিপিএস একটি আদর্শ গতি যা একাধিক সংযুক্ত থাকলেও ভালো অভিজ্ঞতা দেয়।
যেভাবে মোবাইলে-ইন্টারনেট স্পিড-বাড়াবেন
পরিবারের যদি একাধিক ডিভাইস যুক্ত থাকে তাহলে সবাই একসঙ্গে স্ট্রিমিং বা গেমিং আরো কাজ করে তাহলে অন্তত ১০০ থেকে ২০০ এমবিপিএস প্রয়োজন। অফিসের ক্ষেত্রে যেখানে করা হয় বা ভিডিও কনফারেন্সিং চালু থাকে সেখানে ৩০০ এমবিপিএস বেশি স্প্রিট স্পিড সুবিধাজনক। সেসব বাড়িতেই স্মার্ট ডিভাইস বেশি ব্যবহৃত হয় যেখানে স্মার্ট টিভি বা লট ডিভাইস তাদের জন্য ও উচ্চ স্পিড নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে তাই ভবিষ্যতে চাহিদা মেটাতে আরও উন্নত স্পিড প্রয়োজন হবে। ফাইবার অপটিক সংযোগের মাধ্যমে সহজে ১ জিবিপিএস তার বেশি স্পিড পাওয়া যায় যা ভবিষ্যৎ চাহিদার জন্য আদর্শ। আপনার ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী কাজ থেকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ স্পিড নিশ্চিত করুন যা আপনার ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী মানানসই। উচ্চ স্পিড শুধু বর্তমান চাহিদা নয় ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত চাহিদার জন্য একটি স্মার্ট বিনিইয়োগ।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাই স্পিড ইন্টারনেট যুক্ত ৮ দেশ

বিশ্বের কয়টি দেশ ইন্টারনেট স্পিডের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে। তারা প্রযুক্তি এবং অবকাঠামো আর উচ্চ মানের পরিষেবা দ্বারা ইন্টারনেট স্পিড আবরণী অবস্থানে পৌঁছেছে। এখানে কিছু এমন দেশ তুলে ধরা হলো যেগুলো সিঙ্গাপুর এবং দক্ষিণ কোরিয়া বাদ দিয়ে ইন্টারনেটের গতিতে শীর্ষ অবস্থান করছে।

  • সুইজারল্যান্ড ১৩৫ এমবিপিএস। সুইজারল্যান্ড এর ইন্টারনেট পরিষেবা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং দ্রুতগতি সরবরাহ করে। দেশের উন্নত ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক এবং হাই স্পিড ব্রডব্যান্ড চাহিদা পূরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
  • নরওয়ে ১২৮ এমবিপিএস। নরওয়ের উন্নত ডিজিটাল অবকাঠামো এবং সরকারি নীতির কারণে ইন্টারনেট স্পিড খুবই দ্রুত। দেশটি ৫জি নেটওয়ার্কের বাস্তবায়ন দ্রুত করেছে এবং বিস্তারের কারণে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান সফল হয়েছে।
  • লুক্সেমবার্গ গতি ১২০ এমবিপিএস। লুক্সেমবার্গ এর ইন্টারনেট সেবা খুবই উঁচু যেটি তাদের ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক এবং উচ্চমানের যোগাযোগের প্রযুক্তির কারণে সম্ভব হয়েছে। এখানে কম খরচে দ্রুতগতি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্য।
  • জার্মানি ১১৫ এমবিপিএস। জার্মানি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষে থাকলেও ইন্টারনেট গতি কিছুটা তাড়াতাড়ি উন্নত হয়েছে। সরকার এবং বেসরকারি সেক্টর সেবা প্রদানে সমন্বিতভাবে কাজ করছে এবং গ্রামীন এলাকা গুলোতে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের বিস্তার বাড়ানো হয়েছে।
  • রুইনিয়া  ১০০ এমবিপিএস রুইনিয়াতে বিশেষ ইউরোপীয় অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবা উপলব্ধ। দেশটির বিস্তৃত ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক এবং সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চ গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা প্রদান দেশটিকে শীর্ষে রেখেছে।
  • জাপান ১২০ mbbs গতি। জাপান অত্যন্ত উন্নতি প্রযুক্তি ও অবকাঠাম ও দ্বারা একাধিক শহরে উচ্চ গ্রহদের উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে। ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ৫জি এবং অত্যাধুনিক ডিজিটাল সেবা সেবা ব্যবহারকারীদের জন্য ইন্টারনেটের গতি দ্রুত করেছে।
  • ফিনল্যান্ড ১১০ এমবিপিএস। ফিনল্যান্ডে ইন্টারনেট সেবা অত্যন্ত দ্রুত এবং উন্নত। ফিনল্যান্ড সরকারের সাশ্রয়ী দামে উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহ এবং দেশব্যাপী ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারের মাধ্যমে ইন্টারনেট স্পিড নিশ্চিত করা হচ্ছে।
  • নেদারল্যান্ডস ১০০ এমবিবিএস। নেদারল্যান্ড এ ইন্টারনেট সংযোগ খুবই দ্রুত এবং একটি উন্নত ফাইবার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ গতি পাওয়া যায়।

লেখক এর মন্তব্য

যেভাবে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড বাড়াবেন, এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করে ইন্টারনেট সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি খুব কম গতির এমবিপিএস ব্যবহার করে থাকেন এবং উচ্চ গতির ইন্টারনেট সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। এখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইন্টারনেটের এমবিপিএস সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এখান থেকে জানতে পারবেন বিস্তারিত।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মাম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url