পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন এবং ১০ টি প্রতিকার
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? আমরা অনেকেই জানিনা কিন্তু আমার স্বাস্থ্যের জন্য প্রতিনিয়ত পলিথিন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলে পলিথিন কি কারণে ক্ষতিকর এবং প্রতিনিয়ত কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে যাচ্ছে সে বিষয়ে আজকে আমরা জানবো।
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কারণ এটি একটি অপ্রাকৃতিক পদার্থ যা মাটিতে বা পানিতে সহজে পচেনা। পলিথিন মাটিতে ফেলে দিলে তা কয়েকশো বছর ধরে অবিনষ্ট থাকে। এর ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কারণ এবং তার প্রতিকার
পলিথিন কিভাবে পরিবেশ দূষণ করে
আজকে আমরা এই বিষয়ে জানব তার আগে আমরা জানবো পলিথিন কিভাবে পরিবেশ দূষণ করে। পলিথিন পরিবেশের দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে পরিচিত হয় কারণ এটি বিভিন্নভাবে প্রকৃতির নষ্ট করে। পলিথিনের কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য যেমন অবিনষ্টতা এবং পূর্ণ ব্যবহার করার অক্ষমতা পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
- পলিথিন মাটিতে জমে থাকা দীর্ঘ দিন পচেনা। এর ফলে মাটির গুণগত মান হ্রাস পায় এবং উর্বরতা কমে যায়। পলিথিন মাটির গভীরে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে যার ফলে কৃষি জমিতে জলাভাব দেখা যায় এবং ফসলের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। এছাড়াও এটি মাটির পুষ্টির মানকে রাস করে মাইক্রো অ অর্গানিজমের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- পলিথিন জলাশয় এ ফেলা হলে তার জল দূষণের কারণ হয়। পলিথিনের টুকরোগুলো নদী ও সমুদ্রে এ জমে থেকে পানি প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং বন্যার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। পলিথিন সামুদ্রিক জীবজন্তুদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায় কারণ অনেক সামুদ্রিক প্রাণী পলিথিন কে খাবার খেয়ে ফেলে যা তাদের অন্তর বন্ধ করে দেয় এবং মৃত্যুর কারণ হয়।
- পলিথিন পড়ানো হলে তা থেকে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয় যেমন ডাই অক্সিন এবং ফিউরান। এই গ্যাস গুলো বায়ুমন্ডলে মিশে বায়ু দূষণ সৃষ্টি করে যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা ফুসফুসের রোগ এবং এমনকি ক্যান্সারের কারণও হতে পারে।
- মাটিতে ফেলে দেওয়া পলিথিন অনেক সময় গবাদি পশু এবং অন্যান্য প্রাণীর খাবার ভেবে খেয়ে ফেলে যা তাদের মৃত্যু ঘটায়। পলিথিন পেটে জমে তাদের হজম প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে এবং খাদ্যনালী বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে।
প্লাস্টিক দূষণ প্রতিকারের উপায়
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? উপরে এ বিষয়ে আমরা কিছুটা জানলাম এখন আমরা জানব প্লাস্টিক দূষণ প্রতিকারের উপায়। প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সচেতনতা এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। প্লাস্টিক দূষণ বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এটি পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। নিচে কিছু কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো যেগুলোর মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পূর্ণ ব্যবহার এবং পুঃন ব্যবহারঃ প্লাস্টিক পূর্ণ ব্যবহার করা দূষণ কমানোর অত্যন্ত সহজ উপায়। ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যগুলো পুঃন ব্যবহার করার মাধ্যমে বর্জ্য কমানো যায়। যেমন প্লাস্টিকের বোতল ব্যাগ বা কন্টেইনার পুঃন ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে নতুন প্লাস্টিক উৎপাদনের প্রয়োজন কম হবে এবং পরিবেশ দূষণ ও হ্রাস পায়।
প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোঃ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্লাস্টিকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব উপকরণ যেমন কাপড়ের ব্যাগ কাগজের প্যাকেট এবং ধাতব পাত্র ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য যেমন স্ট্র বোতল এবং প্লাস্টিক ব্যাগ পরিহার করা উচিত।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করাঃ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ ও পূর্ণ ব্যবহার এর জন্য সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্বেগ ও প্রয়োজন। শোধনাগার এবং পুঃন প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে যা প্লাস্টিকের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে।
শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধিঃ মানুষকে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। স্কুল কলেজেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষামূলক কর্মশালা ও প্রচারণা চালাতে হবে যাতে মানুষ প্লাস্টিকের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারে এবং যথাযথ প্লাস্টিক ব্যবহারের পদ্ধতি শিখতে পারে।
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এর কারণ
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? উপরে এর মধ্যেই কিছুটা ধারণা আমরা পেয়েছি। এখন আমরা জানবো পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এর কারণ। পলিথিন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর কারণে এটি একটি কৃত্রিম পদার্থ যা প্রকৃতিতে সহজে পচেনা এবং অজৈবভাবে ভেঙে যায় না।
পলিথিন নদী হৃদ এবং সমুদ্র জমা হলে জলের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে এবং জলজ প্রাণীদের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে।
পলিথিন মাটিতে পড়লে তা মাটি শোষণ ক্ষমতার আশ করে এবং মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। ফলে কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ কমে যায়। পলিথিন মাটির ভিতর কার জীবন ওদের প্রাকৃতিক কাজ বাধাগ্রস্ত করে যা মাটির পুষ্টিগুণ কে ক্ষতি করে। সামুদ্রিক প্রাণীরা ভুলবশত বলে দিন খেয়ে ফেলে এর ফলে তাদের খাদ্য অন্তরের মধ্যে দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং মৃত্যুর কারণ হয়।
যদিও পলিথিন পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য কিন্তু এটি পুঃন ব্যবহার করার প্রকল্প গুলি সঠিকভাবে পরিচালিত হয় না। ফলে পলিথিন জমা হতে থাকে এবং বর্জ্যের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকে যা পরিবেশের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এ কারণগুলি পলিথিন কে পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর করে তুলছে।
পলিথিন কি নিষিদ্ধ
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? উপরে ইতিমধ্যে আমরা এ বিষয়ে জেনেছি। এখন আমরা জানবো পলিথিন কি নিষিদ্ধ? পলিথিন অনেক দেশেই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়ার কারণে আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পলিথিন পণ্যগুলোর ব্যবহারের কারণে মাটি পানি এবং বায়ু দূষণের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য প্রাণী জগতের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাই বিভিন্ন দেশ সমস্যার সমাধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
বাংলাদেশের পলিথিন নিষিদ্ধঃ বাংলাদেশে ২০০২ সালে প্রথমবারের মতো পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। বিশেষ করে ৫৫ মাইক্রোনের কম পলিথিন ব্যাগ পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করা হয় তা ব্যবহার এ কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবিক প্রয়োগের অভাবে এখনো দেশে পলিথিন এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে দেখা যায়। অনেক দোকানে পলিথিন ব্যাগ বিক্রি হয় এবং গ্রাহকরাও অবাধে এটি ব্যবহার করেন।
অন্যান্য দেশে পলিথিন নিষিদ্ধঃ বিভিন্ন উন্নত দেশ যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার কমাতে কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। অনেক দেশ পলিথিনের পরিবর্তে পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব পণ্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। আফ্রিকার দেশগুলো পলিথিনের যে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন কেনিয়া পলিথিন ব্যাগ এর উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং এর ব্যবহার করলে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
পলিথিন মাটিতে পচেনা না কেন
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? এ বিষয়ে আমাদের জানা হয়ে গেছে এখন আমরা জানবো পলিথিন মাটিতে পচে না কেন? পলিথিন মাটিতে পচেনা কারণ এটি একটি কৃত্রিম পলিমার যা প্রাকৃতিকভাবে ভেঙে পড়তে সক্ষম নয়। পলিজিন প্লাস্টিক তৈরির প্রধান উপাদান হলো পেট্রোলিয়াম বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে প্রাপ্ত হাইড্রোকার্বন। এর পলিমার গুলো খুবই শক্তিশালী।
প্রাকৃতিক জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া এগুলো ভাঙতে পারে না যা মাটিতে পতনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে। পলিথিনের গঠন হচ্ছে দীর্ঘ শৃঙ্খলাকার কার্বন এবং হাইড্রোজেনের যৌগ যা খুবই স্থিতিশীল। প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর মত এটি জৈবভাবে ভেঙে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে না। মাটিতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক বা অন্যান্য জীবাণু জৈব পদার্থ যেমন গাছের পাতা বা খাদ্য বর্জ্য সহজে ভেঙে ফেলতে পারে।
প্রাকৃতিকভাবে পচন একটি জৈব প্রক্রিয়া যেখানে মাইক্রো অর্গানিজম এবং ব্যাকটেরিয়া বাজার থেকে ক্ষুদ্র উপাদানে ভেঙে দেয়। কিন্তু পলিথিনে এমন কোন রাসায়নিক গঠন নাই যা সহজে প্রাকৃতিক উপাদান জীবাণু দ্বারা হতে পারে। এর ফলে পলিথিনে জৈব পচন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং মাটিতে বছরের পর বছর ধরে অবিন্ষ্ট অবস্থায় থেকে যায়।
পলিথিন ব্যবহার করা উচিত নয় কেন
আমরা জানবো পলিথিন ব্যবহার করা উচিত না কেন? পলিথিন ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এটি পরিবেশ জনসাস্থ্য এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর ক্ষতিকর প্রভাব বহুমুখী এবং দীর্ঘমেয়াদী। পলিথিনের কারণে পরিবেশের ব্যাপক দূষণ সৃষ্টি হয়। এই কিছু কারনে আমাদের পলিথিন ব্যাবহার করা একদম উচিত নয় প্রতিনিয়ত পলিথিন এর ব্যাবহার আমাদের কমাতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কালোজিরার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
পলিথিন বহু বছর ধরে প্রাকৃতিক থেকে যায় যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে। পলিথিন পচনশীল নয় অর্থাৎ এটি মাটিতে বা পানিতে পড়লে সহজে পাওয়া যায় না। এর ফলে মাটির স্বাভাবিক গুনাগুন নষ্ট হয় এবং পানির প্রবাহের বাধা সৃষ্টি করে। জলাশয় জমা হওয়া পলিথিনের কারণে নদীর হৃদ এবং সমুদ্র দূষিত হয়। অনেক সময় প্রাণীরা খাবার ভেবে পলিথিন খেয়ে ফেলে এতে তাদের মৃত্যু ঘটে।
পলিথিন পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয় যা মানুষের শ্বাসযন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং গ্যাস ফুসফুসের রোগ শ্বাসকষ্ট এবং ক্যান্সারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। এছাড়া পলেথিন ব্যবহারের ফলে তৈরি হওয়া বজ্র পচে না বলে একটি জনস্বাস্থ্যের জন্য কিভাবে দাঁড়ায়। পলিথিন মাটিতে জমা হয়ে মাটি শোষণ ক্ষমতাস করে এর ফলে কৃষি ক্ষেত্রে ফসল উৎপাদনে পরিমাণ কমে যায়।
পলিথিন কোথায় ব্যবহৃত হয়
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? এগুলো আমাদের জানা হলো এখন আমরা জানবো পলিথিন কোথায় ব্যবহৃত হয়? পলিথিন একটি বহুল ব্যবহৃত প্লাস্টিক যা দৈনের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর হালকা শক্তিশালী এবং জল রোধী বৈশিষ্ট্য একে নানা ধরনের পণ্য তৈরিতে উপযোগী করে তুলেছে। যদিও পলিথিনের ব্যবহার শুধু সুবিধা জনক।
- পলিথিনে সবচেয়ে প্রচলিত ব্যাবহার হল শপিং ব্যাগ তৈরিতে। বিভিন্ন দোকানে বা সুপার মার্কেটে কে তাদের জন্য এই প্লাস্টিক ব্যবসা সরবরাহ করা হয় যা সহজে বহনযোগ্য এবং কম খরচে উৎপাদনযোগ্য। একবার ব্যবহারযোগ্যই ব্যাংকগুলো ব্যবহারের পর সাধারণত ফেলে দেওয়া হয় যা পরিবেশ দূষণের প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়ায়।
- পলিথিন প্যাকেজিং শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। খাদ্য ইলেকট্রনিক পণ্য প্রসাধনী এবং অন্যান্য বক্তাপণ্যগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে পলিথিনের ব্যবহার দেখা যায়। পলিথিন ফিল্ম মোরগ বা প্যাকেট হিসেবে পণ্যকে বায়ু ও আদ্রতা এবং ধুলামুক্ত রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে খাদ্য প্যাকেজিং এর এটি খাদ্যকে দীর্ঘদিন সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
- বিভিন্ন একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্য যেমন প্লাস্টিকের প্লেট কাপ গ্লাস এবং কাটা চামচ তৈরিতে পলিথিন ব্যবহার করা হয়। পণ্যগুলো একবার ব্যবহারের পর সাধারণত ফেলে দেওয়া হয় যা পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- পলিথিন বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় যেমন পাইপ ট্যাংক এবং মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরিতে। এছাড়াও নির্মাণ শিল্পে পলিথিন শীট বা ত্রিপল ব্যবহার করা হয় যা নির্মাণ সামগ্রী রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- কৃষি খাতেও পলিথিনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। পলিথিন শীট দিয়ে মাটি ঢেকে গাছের শিকড়কে রক্ষা করা হয় এবং জল সংরক্ষণে সাহায্য করে। এছাড়া গ্রীন হাউস তৈরিতেও পলিথিন ব্যবহার করা হয় যা ফসলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে।
পলিথিন পোড়ালে কি ক্ষতি হয়
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? আমরা জেনে গেছি এখন আমরা জানবো। পলিথিন পোড়ালে কি ক্ষতি হয়? পলিথিন পোড়ানো পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পলিথিন একটি সিনথেটিক পলিমার যা পড়ালে বিপদজনক রাসায়নিক উৎপাদন হয় এবং বায়ু দূষণ ঘটায় যা মানুষের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরদিন পোড়ালে কার্বন ডাই অক্সাইড কার্বন-মনোক্সাইড মিথেন এবং অন্যান্য বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
আরো পড়ুনঃ গাজর খাওয়ার ১০ উপকারিতা ও অপকারিতা
গ্যাস গুলো বায়ুতে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ায়। বিশেষ করে কার্বন মনোক্সাইড অত্যন্ত ক্ষতিকর যা মানুষের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে ফেলে এবং শ্বাসকষ্ট মাথা ঘোরা এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। পরের দিন পোড়ানোর ফলে ডাই অক্সিনএবং ফিউরান নামে দুটি অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়। এই কাজগুলো স্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করলে ফুসফুসের ক্ষতি হয়।
হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এছাড়া এ রাসায়নিক গুলো পরিবেশের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে মাটি ও পানি দূষণ ঘটায়। পলিথিন পোড়ানোর ফলে যে গ্যাস গুলো উৎপন্ন হয় সেগুলো শ্বাস এর মাধ্যমে গ্রহণ করলে শ্বাস জনিত নানা সমস্যা তৈরি হয়। বিশেষ করে অ্যাজমা এবং ব্রংকাইটিস আরো শ্বাসকষ্টের মতো রোগ দেখা দিতে পারে। শীর্ষ এবং বয়স্ক মানুষের গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রতি বেশি সংবেদনশীল।
পলিথিন কত বছর পর পচে
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? আমরা জানি এখন আমরা জানবো পলিথিন কত বছর পর পচে? পলিথিন একটি সিন্থেটিক ক প্লাস্টিক যা প্রাকৃতিকভাবে পচে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেনা। সাধারণত পলিথিন মাটিতে বা পানিতে পড়ে গেলে এটি কয়েক বছর ধরে অবিকৃত অবস্থায় থেকে যায় যা বিশেষজ্ঞদের মতে পলিথিন ব্যাগ মোড়ক এবং অন্যান্য পলিথিন পণ্য পচে যেতে ১০০ থেকে ৬০০ বছর পর্যন্ত সময় নিতে পারে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা।
পলিথিনের পচন কাল তার গঠন এবং ব্যবহার অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন লো ডেনসিটি পলিথিন এবং হাই ডেন্সিটি পলিসি উভয়ই মাটিতে পড়লে দীর্ঘ সময় ধরে অবিকৃত থাকে। এছাড়া পলিথিনের পণ্যের গঠন এবং তৈরির প্রক্রিয়ার উপর ও এর পতনকাল নির্ভর করে। সাধারণত থাইনার পলিথিন সিট গুলি পচেতে বেশি সময় নেয়। যেখানে থিকার পণ্যগুলি আরো দীর্ঘস্থায়ী হয়।
পরে তিনি দীর্ঘস্থায়ী প্রকৃতি মাটির উর্বরতা নষ্ট করে এবং জলবায়ুর ভারসাম্য নষ্ট করে। এটি মাটিতে জমা হয়ে যায় এবং মাটি শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় যা কৃষির জন্য ক্ষতিকর। পলিথিন যখন পানিতে পড়ে তখন একটি জলজ বৈচিত্রের জন্য বিপদজন। কারণ অনেক প্রাণী আছে যারা পলিথিন কে খাওয়ার ভাবে খেয়ে ফেলে এবং তাদের খাদ্য হজমে সমস্যা হয়।
আমাদের শেষ কথা
পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন? এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করে পলিথিন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি পলিথিন ব্যবহার করে থাকেন এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। এখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু পলিথিন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এখান থেকে জানতে পারবেন বিস্তারিত।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত এই ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
পদ্মাম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url