নতুন চুল গজানোর ১৫ টি উপায়
নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু আমাদের নতুন চুল গজানোর উপাদান সম্পর্কে জানতে হবে। নতুন চুল গজায় কিভাবে এবং কোন তেল ব্যবহার করলে অতি দ্রুত নতুন চুল গজাবে এ বিষয়ে জেনে নিতে হবে।
নতুন চুল গজানোর মধ্যে রয়েছে এক অন্যরকম নতুনত্ব। আমাদের অনেকের চুল পড়ে যায় এবং নতুন চুল গজাতে অনেক সময় নিয়ে নেয় যা আমাদের জন্য অন্যরকম বিরক্তিকর এক ব্যাপার তাই আমাদের জেনে নিতে হবে নতুন চুল গজায় দ্রুত কিভাবে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ নতুন চুল গজানোর উপায়
নতুন চুল গজানোর উপায় কি
নতুন চুল গজানোর উপায়। এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। নতুন চুল গজানোর জন্য কিছু কার্যকরী উপায় রয়েছে যা প্রাকৃতিকভাবে বা চিকিৎসা কত সহায়তা পেতে পারা যায়। কিছু সহজ পদ্ধতি আলোচনা করা হলো।
- স্বাস্থ্যকর পুষ্টিকর খাবার নতুন চুল গজানোর জন্য অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে ভিটামিন বি সি ডি ই এবং জিংক সমৃদ্ধ খাবার খেলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ডিম বাদাম মাছ শাক সবজি ফলমূল ইত্যাদি ডায়েটে রাখা যেতে পারে।
- চুলের জন্য তেল মাসাজ খুবই উপকারী। বিশেষ করে নারিকেল তেল আমন্ড তেল আর্গান তেল ইত্যাদি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যা নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন তেল ম্যাসাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- দেহে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে চুল শুষ্ক ও দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রতিদিন আট থেকে ১০ ক্লাস পানি পান করলে শরীর হাইড্রেট থাকে এবং চুলের বৃদ্ধি ও বৃদ্ধি পায়।
- যদি প্রাকৃতিক উপায়ে কাজ না হয় তাহলে মিনোক্সিডিল বা ফিনাস্টেরাইডের মত ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া পিআরপি থেরাপি ও চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ চুল পড়ার অন্যতম কারণ। নিয়মিত যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করলে মানসিক চাপ কমে যা চুলের বৃদ্ধির জন্য সহায়তা করতে পারে।
মাথার সামনে নতুন চুল গজানোর উপায়
নতুন চুল গজানো সম্পর্কে। যেহেতু এ বিষয়ে আলোচনা করছি সেহেতু আমাদের চুল গজানোর উপায় এর পাশাপাশি মাথার সামনে চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। মাথার সামনে চুল পড়া সাধারণত বেশিরভাগ মানুষের জন্য উদ্যোগের কারণ হয়। মাথা সামনে চুল গজাতে নিচে কিছু উপায় সাহায্য করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ হলুদ গাছের ১৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
- বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭ চুলের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এবং এটি চুলের গোড়াকে মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। নিয়মিত বায়োটিন বা মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কে নিলে মাথার সামনে চুলের সমস্যা অনেক অংশ কমে আসতে পারে এছাড়া ভিটামিন ডি এবং বিশেষ ভূমিকা রয়েছে চুলের বৃদ্ধিতে।
- ক্যাস্টর অয়েল চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় এবং দ্রুত চুল গজাতে সহায়তা করে। প্রতিদিন রাতে মাথার সামনের চুলে হালকা করে ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ করলে তার চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়তা করে। এটি প্রাকৃতিক মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
- অ্যাপেল সিডার ভিনেগার চুলের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এটি মাথার ত্বকের পিএইচ লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং চুলের গোড়াকে পরিষ্কার করে। পানির সঙ্গে অল্প অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে স্কাল্পে ম্যাসাজ করলে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
- পেঁয়াজের রসের মধ্যে থাকা সালফার চুলের গোড়াকে সক্রিয় করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন পেঁয়াজের রস মাথা সামনের অংশে ব্যবহার করে ৩০ মিনিট রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- চুলের সামনের অংশে সঠিকভাবে ট্রিমিং করা হলে নতুন চুল গজানোতে সহায়তা করতে পারে। এতে চুলের ক্ষুদ্র কোষগুলো সক্রিয় হয় যা চুলের গতি বাড়াতে পারে।
- রেড লাইট থেরাপি এটি চুলের গোড়ায় আলু প্রয়োগের মাধ্যমে কাজ করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। মাথার ত্বক এর রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যা নতুন চুল বৃদ্ধিতে কার্যকর। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এ থেরাপি নেওয়া যেতে পারে।
ছেলেদের চুল গজানোর উপায়
চুল গজানোর উপায়। আমরা অনেকটাই জেনে গেছি এখন আমরা জানবো ছেলেদের চুল গজানোর উপায় প্রাকৃতিক আধুনিক পদ্ধতির সমন্বয় থাকতে পারে। জীবনযাত্রা পরিচর্যা কিছু পরিবর্তন এনে চুলের ঘনত্ব বাড়ানো সম্ভব। এখানে কিছু ইউনিক উপায় উল্লেখ করা হলোঃ
ক্যাফেইন যুক্ত শ্যাম্পুঃ ক্যাফেইন চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। এটি চুলের গোড়াকে সক্রিয় করে এবং চুলের পড়ার হার কমিয়ে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করতে পারে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ক্যাফেইনযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুলের গতি বাড়ে এবং মাথার ত্বক ও সতেজ থাকে।
নিয়মিত রোজমেরী অয়েল ব্যবহারঃ রোজমেরি অয়েলের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যা নতুন চুল গজানোর জন্য কার্যকর। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন রোজমেরি অয়েল দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করলে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। এটি বিশেষ করে যারা এলোপেশিয়ার শিকার তাদের জন্য এটি বেশ কার্যকর।
স্যাভ পালমেটো সাপ্লিমেন্টঃ স্যাভ পালমেটো এটি প্রাকৃতিক উপাদান যা চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। এটি টেস্টও স্টরেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং মাথার সামনের অংশে চুল নতুন গজাতে সহায়তা করে। এই সাপ্লিমেন্ট বাজারে সহজলভ্য এবং এটি নিয়মিত সেবনে চুলের ঘনত্ব বাড়ে।
যোগ ব্যায়াম এবং শিরশাসনঃ মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর জন্য শিরশাসন একটি চমৎকার যোগাসন। প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ মিনিট শিরশাসন করলে মাথার ত্বকে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ হয় যা নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে। এটি মস্তিষ্কের অক্সিজেন সরবরাহ ও বাড়ায় যাচলের জন্য উপকারী।
কালোজিরার তেলঃ কালোজিরার তেলে থাকা থাইমো কুইনোন চুলের ফলিকল গুলোর কার্যকারিতা বাড়ায়। এটি চুলের ক্ষুদ্র কোষগুলিকে পুনর্জীবিত করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে কালো জিরার তেল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলে তা চুল পড়া রোধ করে এবং নতুন চুলের ত্বরান্বিত করে।
এল ডি এল থেরাপিঃ এলডিএল আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি যা চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে। এটি চুলের গোড়ায় লেজার লাইট প্রয়োগের মাধ্যমে কাজ করে এবং চুলের পুনর্জন্ম সহায়তা করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই থেরাপি নেওয়া যেতে পারে।
কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায়
নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে আমরা জেনে নিয়েছি। এখন আমরা জানবো কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায়। মানুষের চুল গজানোর প্রক্রিয়া বয়সের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত চুল গজানোর হার সবচেয়ে দ্রুত হয় শৈশব থেকে শুরু করে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত। এরপর থেকে ধীরে ধীরে চুলের বৃদ্ধি কমে যেতে থাকে। তবে বিভিন্ন কারণে ৩০ বছরের পরও চুল গজানো অব্যাহত থাকতে পারে।
শৈশব থেকে শুরু করে কিশোর বয়স পর্যন্ত চুল বৃদ্ধির হার খুব দ্রুত হয়। এই সময় চুলের গোড়া সক্রিয় থাকে এবং নতুন চুল দ্রুত গজায়। কিশোর বয়সের হরমোনাল পরিবর্তনের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বয়সের পর্যায়ে চুলের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হয়। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে চুলের বৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়। এ সময় হরমোনের ভারসাম্য অনেকটাই স্থিতিশীল থাকে।
নতুন চুল গজানোর হার ভালো থাকে তবে চুল পড়ার প্রক্রিয়াও এই বয়সে শুরু হতে পারে বিশেষ করে যারা বংশগতভাবে চুল পাতলা হওয়ার সমস্যায় ভোগে। ৩০ বছরের পর থেকে চুল গজানোর গতি কিছুটা ধীর হতে শুরু করে। হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়া বংশগত কারণ এবং পরিবেশগত প্রভাব চুলের বৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলে। ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজানো সম্ভব তবে গতি বেশ কম হতে পারে।
অল্প বয়সে ছেলেদের চুল পড়ার কারণ
নতুন চুল গজানোর উপায়। আমরা জানতে পেরেছি এখন আমরা জানবো অল্প বয়সে ছেলেদের চুল পড়ার কারণ। অল্প বয়সে ছেলেদের চুল পড়া এখন একটি সাধারন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যা শারীরিক মানসিক এবং পরিবেশগত বিভিন্ন কারণে ঘটে থাকে। এই সমস্যার পেছনে প্রধান কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- বংশগতভাবে চুল পড়া যাকে এন্ড্রোজেনিক এবং এলোপেশিয়া বলা হয় অল্প বয়সে ছেলেদের চুল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। পরিবারের অন্য পুরুষ সদস্যদের যদি চুল পড়ার সমস্যা থাকে তাহলে জেনেটিক কারণে অল্প বয়সে এই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
- টেস্টও স্টেরন হরমোন ডাইহাইড্রো টেস্টেরন এর রূপান্তরিত হয়ে চুলের ফলিকল কে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই প্রক্রিয়াটি চুলের গোড়া দুর্বল করে ফলে চুল পড়া শুরু হয়। ডি এইচ টি এর অতিরিক্ত সক্রিয়তা বিশেষ করে অল্প বয়সের ছেলেদের ক্ষেত্রে চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
- মানসিক চাপ বা স্ট্রেস চুল পড়ার অন্যতম কারণ। উচ্চমাত্রার মানসিক চাপ হরমোনাল ভারসাম্য কে প্রভাবিত করে যা টেলোজেন ইফ্লুভিয়াম নামক সমস্যা সৃষ্টি করে যেখানে চুল বৃদ্ধি চক্র বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে অতিরিক্ত চুল পড়া শুরু হয়।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বা পুষ্টির ঘাটতিও অল্প বয়সে চুল পড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। বিশেষ করে প্রোটিন আয়রন ভিটামিন বি এবং জিংকের অভাব চুলের গঠন দুর্বল করে ফেলে। এতে চুল দুর্বল হয়ে যায় এবং চুল পড়ার প্রবণতা বাড়ে।
- অতিরিক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট যেমন হেয়ার জেল এবং কেমিক্যাল যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুলের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট হয়। অতিরিক্ত হেয়ার স্টাইলিং বা হিটের ব্যবহার ও চুলের ক্ষতি করতে পারে যা চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
- থাইরয়েড ডায়াবেটিস অ্যানিমিয়া মত স্বাস্থ্যগত সমস্যা গুলো ও চুল পড়ার সঙ্গে জড়িত। এসব সমস্যার শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায় যা চুলের গোড়া দুর্বল করে।
- পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দেহের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয় যা চুলের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে। এছাড়া ঘুমের অভাব মানসিক চাপ বাড়ায় যা চুল পড়া ত্বরান্বিত করে।
পুরুষের চুল গজাতে কত সময় লাগে
নতুন চুল গজানোর উপায়। জেনেছি এখন জানবো একজন পুরুষের চুল গজাতে কত সময় লাগে। পুরুষের চুল গজানোর সময় কাল বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন হতে পারে তবে সাধারণ চুল গজানো প্রক্রিয়াটি দীর্ঘতম এবং কয়েকটি ধাপে সম্পূর্ণ হয়। একটি চুল পড়ে গেলে সাধারণত নতুন চুল গজাতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। এটি নির্ভর করে চুলের ফলিকল কত দ্রুত পুনরায় সক্রিয় হতে পারে তার ওপর।
আরো পড়ুনঃ লেবুর ১৫ উপকারিতা ও অপকারিতা
চুল গজানোর একটি নির্দিষ্ট চক্র রয়েছে। অ্যানাজেন এটি চুলের সক্রিয় বৃদ্ধির সময়কাল যা সাধারণত দুই থেকে ছয় বছর স্থায়ী হয়। এ সময়ে চুল প্রতি মাসে প্রায় এক সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কেটাজিন ধাপটি খুব সংক্ষিপ্ত সাধারণত দুই থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়। এই সময় চুলের গোড়া সংকুচিত হয়ে যায় এবং বৃদ্ধির গতি কমে যায়।
চুলের বৃদ্ধির গতি বাড়ানোর জন্য কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে যেমন মিনোক্সিডিল এই ওষুধগুলো চুলের গোড়াকে সক্রিয় করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। তবে এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতিতে ফল পেতে তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। টেলোজেন এই ধাপ চুলের বিশ্রামের ধাপ যা দুই থেকে তিন মাস স্থায়ী হয়। এ সময়ে নতুন চুল গজানোর প্রস্তুতি চলে এবং পুরানো চুল পড়ে যেতে শুরু করে।
চুল গজানো সবচেয়ে ভালো তেল কোনটি
চুল গজানোর জন্য তেল ব্যবহারে প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ কয়েকটি তেল বিশেষভাবে কার্যকরী। এগুলো চুলের ফলিকল গুলিকে মজবুত করে রক্ত সঞ্চালন বাড়ি নতুন চুল গজানো প্রক্রিয়া তরম্বিত করে। এখানে কিছু নতুন ও কার্যকর তেল নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
- পেঁয়াজের বীজের তেল চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে রয়েছে সালফার যা চুলের ফলিকলগুলিকে পুনর্জীবিত করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি চুলের প্রতিরোধ করে এবং চুলের গতি বাড়ায়।
- পেপারমিন্ট তেল একটি প্রাকৃতিক উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে যা মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুল গজানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। এর শীতল প্রভাব এবং চুলের ফলিকলগুলোকে সক্রিয় করে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। পেপারমিন্ট ্ট তেল ব্যবহারে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয়।
- ব্রাহ্মী তেল আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি মাথার ত্বকে পুষ্টি যোগায় এবং চুলের ফলিকলগুলোকে মজবুত করে। নিয়মিত ব্যাপারে ব্রাহ্মী তেল চুলের ঘনত্ব বাড়ায় এবং চুল পড়া কমিয়ে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
- রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং লিনোলিক এসিড যা চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায়। এটি মাথার ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং নতুন চুল গজানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। বিশেষ করে শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত চুলের ক্ষেত্রে তেল অত্যন্ত কার্যকর।
- তিলের তেল চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং এটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ও ব্যবহৃত হয়। এতে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলের ফলিকলগুলোকে শক্তিশালী করে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
কিভাবে চুল ঘন ও লম্বা করা যায়
চুল ঘন ও লম্বা করার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। কিছু উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো যা চুলের ঘনত্ব দৈর্ঘ্য বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। পেঁয়াজের রস চুলের ঘনত্ব বাড়াতে অত্যন্ত কার্যকর। এতে রয়েছে সালফার যা চুলের ফলিকল সক্রিয় করে এবং চুল পড়া কমায়। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার মাথার ত্বকে পেঁয়াজের রস লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলা দরকার চুলের বৃদ্ধি হয় এবং ঘন হয়।
আরো পড়ুনঃ আমের ১০ উপকারিতা ও অপকারিতা
চুলের মুল উপাদান হলো কেরাটিন যা একটি প্রোটিন তাই চুল ঘন ও লম্বা করতে হলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি। ডিম মাছ মাংস বাদাম এবং মসুর ডালের মত প্রোটিনযুক্ত খাবার চুলের গঠন মজবুত করে এবং দ্রুত চুলের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। মেথি চুলের বৃদ্ধির জন্য একটি চমৎকার প্রাকৃতিক উপাদান এতে থাকা প্রোটিন ও নিকোটিনিক এসিড চুলের গোড়া মজবুত করে।
চুলের বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। মেথির বীজ সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে তা পেস্ট করে মাথার ত্বকে লাগালে চুল ঘন ও লম্বা হয়। ইনভার্শন মেথড এ পদ্ধতিতে মাথা নিচের দিকে ঝুলিয়ে রাখা হয় যাতে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন ৫-৭ মিনিটে পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং চুল ঘন হয়। এটি চুলের ফলিকলগুলোকে সক্রিয় করতে পারে।
ছোট চুল রাখলে কি চুল পড়া কমে
চুল ছোট রাখলে চুল পড়া কমে যাবে এমন ধারণা অনেকের মধ্যে প্রচলিত তবে চুলের দৈর্ঘ্যের সঙ্গে চুল পড়ার কোন সরাসরি সম্পর্ক নেই। চুল পড়ার মূল কারণগুলো সাধারণত চুলের গোড়া বা ফলিকল এবং মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। চুল ছোট রাখলে কিছু সুবিধা পাওয়া যেতে পারে কিন্তু এটি চুল পড়ার সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। চুল ছোট রাখলে চুলের ওজন কম হয় ফলে চুলের গোড়ায় অতিরিক্ত চাপ বা টান পড়ে না।
দীর্ঘচুলের ক্ষেত্রে বিশেষ করে আটসাট চুল বাধার ফলে চুলের গোড়ায় চাপ পড়ে এবং তা চুল পড়ার কারণ হতে পারে। তাই চুল ছোট রাখলে এ ধরনের টান বা চাপ কমে যায় যা চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সহায়ক হতে পারে। ছোট চুলের পরিচর্যা সহজ হয় এবং চুলে জট লাগার সম্ভাবনাও কমে। দীর্ঘ চুলের ক্ষেত্রে প্রায়ই চুল আচড়ানো এর সময় জট পড়ে যা চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
ছোট তুললে সেই সমস্যা কম থাকে এবং চুল কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ চুলের প্রান্ত গুলো প্রায় শুষ্ক ফাটা হয় যা চুলের ভঙ্গুরতা বাড়ায়। ছোট চুলের ক্ষেত্রে প্রান্ত গুলো নিয়মিত কাটা গেলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং প্রান্ত ফাটার কারণে চুল কম ভাঙ্গে। এতে চুল মোটের উপর স্বাস্থ্যকর দেখায়। পড়ার প্রকৃত কারণ হলো জেনেটিক্স হরমোনাল পরিবর্তন।
আমাদের শেষ কথা
নতুন চুল গজানোর উপায়। এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করে চুল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। এখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু চুল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এখান থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
পদ্মাম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url