গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় ২০২৪
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? আমরা অনেকেই জানিনা।
কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বুঝা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম করা হয় মা ও শিশু
স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখতে এবং গর্ভাবস্থার বিভিন্ন ধাপে তথ্য সংগ্রহ করতে।
আল্ট্রাসনোগ্রাম সাধারণত ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে করা হয়। এতে ভ্রুনের
উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয় গর্ভধারণের সঠিক সময় নির্ধারণ করা হয় এবং একাধিক ভ্রুন আছে কিনা তা বোঝা যায়। তাই আজকে আমরা জানব গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট
কিভাবে বুঝা যায়।
পোস্ট সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার সম্পর্কে ২০২৪
- গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম করার নিয়ম
- আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ছেলে না মেয়ে বোঝার উপায় ২০২৪
- গর্ভাবস্থায় কতবার ডাক্তার দেখানো উচিত
- গর্ভাবস্থায় কি কি টেস্ট করতে হয়
- আল্ট্রাসনোগ্রাফি কেন করা হয়
- আল্ট্রাসনোগ্রাম কি খালি পেটে করতে হয়
- আল্ট্রাসনোগ্রাফি খরচ কত ২০২৪
- আলট্রাসনোগ্রাম করতে কত সময় লাগে
- আল্ট্রাসনোগ্রাম কত প্রকার
- আমাদের শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম করার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? আজকে আমরা এ বিষয়
নিয়ে আলোচনা করব। গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম মায়ের ও শিশু স্বাস্থ্য
পর্যবেক্ষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। সাধারণত গর্ভাবস্থা তিনটি
প্রধান পর্যায়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়।
- প্রথম ত্রৈমাসিক ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ
- দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক ১৮ থেকে ২২ সপ্তাহ
- তৃতীয় ত্রৈমাসিক ৩২ থেকে ৩৪ সপ্তাহ
প্রথম ত্রৈমাসিক ৬ থেকে ৮ সপ্তাহঃ গর্ভধারণের প্রথম দিকে প্রায় ছয় থেকে
আট সপ্তাহের মধ্যে প্রথম আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। এতে গর্ভের ভ্রুণ টি সঠিক
অবস্থানে আছে কিনা গর্ভধারণ একাধিক কিনা এবং ভ্রুণ এর হার্টবিটের উপস্থিতি
নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া গর্ভধারণের সঠিক সময়ও নির্ধারণ করা হয়।
দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক ১৮ থেকে ২২ সপ্তাহঃ দ্বিতীয়
ত্রৈমাসিকের আলট্রাসনোগ্রাম সবচেয়ে বিস্তারিত এবং গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে
ভ্রূণের শারীরিক গঠন যেমন মস্তিষ্ক হৃদ যন্ত্র আর ও অন্যান্য অঙ্গ পরীক্ষা করা
হয়। এছাড়া গর্ভফুলের অবস্থান এবং ভ্রুনের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
তৃতীয় ত্রৈমাসিক ৩২ থেকে ৩৪ সপ্তাহঃ গর্ভাবস্থার শেষ দিকে ৩২ থেকে ৩৪
সপ্তাহ এর মধ্যে তৃতীয় আলট্রাসনোগ্রাম করা হতে পারে। এতে শিশুর বৃদ্ধি অবস্থান
এবং গর্ভের পানির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। সঠিক সময়ে এবং নিয়মিত
আল্ট্রাসনোগ্রাম গর্ভাবস্থায় সুস্থতা নিশ্চিত করতে এবং শিশুর সুস্থ বিকাশ
নিশ্চিত করতে সহায়ক।
আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ছেলে না মেয়ে বোঝার উপায় ২০২৪
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? ইতিমধ্যে আমরা জানতে
পেরেছি এখন আমরা জানবো আলট্রাসনোগ্রাম দেখে রিপোর্ট ছেলে না মেয়ে বোঝার উপায়।
আলট্রাসনোগ্রামে যদি ভ্রূণের যৌনাঙ্গে একটি নির্দিষ্ট আকারের অঙ্গ দেখা যায়
যা পেনিস বা অন্ডকোষের মত দেখায় তবে ধারণা করা হয় ভ্রুণটি ছেলে। কখনো কখনো
পায়ের মাঝখানে তিনটি সমান্তরাল রেখা, একটি টার টোল সাইন দেখা যায় যা ছেলের
লক্ষণ হতে পারে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে আলট্রাসনোগ্রাম এ যৌনাঙ্গে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। পায়ের
মাঝখানে তিনটি সাদা রেখা বা হ্যাম বার্গার শাহীন নামে পরিচিত চিহ্ন দেখা যায় যা
ভ্রুনের যৌন বা যৌনাঙ্গ নির্দেশ করে। গর্ভাবস্থায় ১৮ থেকে সাধারণত
আলট্রাসনোগ্রাম দেখা সম্ভব হয়। এই সময়ে ব্রণের শারীরিক গঠন বিশেষ করে যৌন
অঙ্গগুলো গঠিত হয়।
বাংলাদেশের মতো দেশে আইন অনুযায়ী ভ্রুনের লিঙ্গ প্রকাশ করা নিষিদ্ধ। চিকিৎসক বা
আল্ট্রাসনোগ্রাফাররা আইনের প্রতি সম্মান রেখে একটি প্রকাশ করেন না। এ কারণে লিঙ্গ
নির্ধারণের আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট পাওয়া গেলেও এর উপর ভিত্তি করে সন্তানটির
লিঙ্গ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। গর্ভাবস্থায় প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত সন্তানের
সুস্থতা নিশ্চিত করা লিঙ্গ নয়।
গর্ভাবস্থায় কতবার ডাক্তার দেখানো উচিত
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? এই সম্পর্কে বিস্তারিত
আমরা জেনেছি এখন আমরা জানবো গর্ভাবস্থায় কতবার ডাক্তার দেখানো উচিত হতে পারে
একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ডাক্তারে পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
এটি মা ও শিশু সুস্থতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যে কোন জটিলতা এড়াতে সহায়তা
করে। গর্ভাবস্থার বিভিন্ন ধাপে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা ডাক্তার দেখানো উচিত।
সাধারণত প্রথম দিকে এক থেকে দুইবার ডাক্তার দেখানো হয় এ সময় গর্ভধারণের নিশ্চিত
করুন এবং প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ভ্রূণের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য কিছু
টেস্ট করা হয়। মায়ের পুষ্টির জীবনযাত্রা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ
দেওয়া হয়। এই সময় প্রতি চার সপ্তাহের পর পর একবার ডাক্তার দেখানো উচিত।
আল্ট্রাসনোগ্রাম ১৮ থেকে ২২ সপ্তাহের ভ্রূণের শারীরিক গঠন পরীক্ষা করার জন্য
গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া মায়ের রক্তচাপ ওজন এবং অন্যান্য শারীরিক পরিবর্তনের উপর
নজর রাখা হয়। ডাক্তার দেখানোর ফ্রিকোয়েন্সি আরো বাড়িয়ে প্রতি দুই সপ্তাহে
একবার এবং ৩৬ সপ্তাহের পর থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার ডাক্তার দেখানো উচিত। এ সময়
এ শিশুর অবস্থান ওজন এবং ডেলিভারি সম্ভবত সময় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
গর্ভাবস্থায় কি কি টেস্ট করতে হয়
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? যেটা আমরা আগে জেনে
এসেছি এখন আমরা জানবো গর্ভাবস্থায় কি কি টেস্ট করতে হয়। গর্ভাবস্থায়
নিয়মিত পরীক্ষা করা মায়ের এবং শিশু স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ
সময় বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করা হয় যা গর্ব অবস্থায় প্রতিটি ধাপে প্রয়োজনীয়
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করে।
আরো পড়ুনঃ গাজর খাওয়ার ১০ উপকারিতা ও অপকারিতা
- রক্তের পরীক্ষা
- ইউরিন পরীক্ষা
- আলট্রাসনোগ্রাম
- গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট
- গ্রুপ দি স্টেপ টোকক্কাস পরীক্ষা
রক্তের পরীক্ষাঃ গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে রক্তের টেস্ট অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। এতে হিমোগ্লোবিন রক্তের গ্রুপ আর এইচ ফ্যাক্টর এবং থ্যালাসেমিয়া
পরীক্ষা করা হয়। এছাড়াও রক্তে শর্করা এবং হেপাটাইটিস বি এবং এইচআইভি ওসিপি
প্লিজ এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়।
ইউরিন পরীক্ষাঃ মূত্রের মাধ্যমে সংক্রমণ প্রোটিন এবং শর্করা পরীক্ষা করা
হয়। গর্ভাবস্থায় প্রোটিনের মাত্রা বাড়ালে কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে যা
প্রিক্ল্যাম্প সিয়ার লক্ষণ হতে পারে। এছাড়া সংক্রমণ থাকলে তা দ্রুত চিকিৎসার
প্রয়োজন।
আলট্রাসনোগ্রামঃ গর্ভাবস্থায় কয়েকবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়। প্রথম
আলট্রাসনোগ্রাম ব্রণের উপস্থিতি অবস্থান নিশ্চিত করতে হয়। পরে
ভ্রূণের চারিগঠন এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকাশ পরীক্ষা করতে আরও
আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়।
গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্টঃ গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি নির্ধারণ
করতে টেস্ট করা হয়। এ টেস্ট করা হয়। সাধারণত এটি ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে করা
হয়। গ্লুকোজের মাত্রা বেশি হলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন
হয়।
গ্রুপ দি স্টেপ টোকক্কাস পরীক্ষাঃ ৩৫ থেকে ৩৭ সপ্তাহের মধ্যে
এ পরীক্ষা করা হয়। এটি একটি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন যা প্রসবের সময় শিশুর জন্য
ক্ষতি করাতে পারে তাই এর উপস্থিতি থাকলে চিকিৎসা জরুরী। এসব টেস্ট নিয়মিত করা
মায়ের স্বাস্থ্য এবং শিশু সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করতে সহায়ক।
আল্ট্রাসনোগ্রাফি কেন করা হয়
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? আমরা উপরের কথা
গুলোর মধ্যে জেনেছি। আমরা জানবো আলট্রাসনোগ্রাফি কেন করা হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাফি
একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি যা উজ্জ্বল ফ্রিকোয়েন্সি সাউন্ড এর
ব্যবহার করে শরীরের অভ্যন্তরের অঙ্গ গুলো ছবি তুলতে সহায়তা করে এটি একাধিক কারণে
করা হয় এম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি একটি নিরাপদ ব্যথায় পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।
আরো পড়ুনঃ লেবুর ১৫ উপকারিতা ও অপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ভ্রুনের স্বাভাবিক বিকাশ নিরীক্ষণের জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি প্রায় ব্যবহৃত হয়। গর্ভাবস্থার বিভিন্ন স্বাস্থ্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গঠন এবং জরায়ুতে ভ্রুনের অবস্থান জানার জন্য একটি প্রয়োজনীয়। এছাড়া যমজ সন্তান আছে কিনা বা অন্যান্য কোন গর্ভকালীন জটিলতা রয়েছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
- বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অঙ্গ যেমন লিভার কিডনি গলব্লাডার প্যানক্রিয়াস এবং প্রজনন অঙ্গসময়ের সমস্যা সনাক্ত করতে আলট্রাসনোগ্রাফি অত্যন্ত কার্যকর। অঙ্গ গুলোর আকার গঠন এবং কাজের অবস্থা বুঝতে এ পদ্ধতিটি ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ কিডনিতে পাথর লিভারের ফ্যাট বা গল ব্লাডারে পাথরের সমস্যা সনাক্ত করা যায়
- টিউমার বা ক্যান্সার সনাক্তকরণের ক্ষেত্রেও আল্ট্রাসনোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়। যদি কোন অস্বাভাবিক গঠন বা স্ফিততা দেখা যায় তবে পদ্ধতির মাধ্যমে বিশদভাবে পরীক্ষা করা যায়। রক্ত প্রবাহের অবস্থা নির্ণয় আলট্রাসনোগ্রাফি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রক্তনালীগুলোতে রক্ত প্রবাহ হচ্ছে কিনা কি কোন ব্লকের বা সংকীর্ণতা আছে কিনা তাই এই পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়।
- সবশেষে প্রজনের অঙ্গের সমস্যা যেমন ইনফেকশন টি মার বা অন্যান্য জটিলতা শনাক্ত করার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে আলট্রাসনোগ্রাফি শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সঠিক নির্ণয়ের চিকিৎসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।
আল্ট্রাসনোগ্রাম কি খালি পেটে করতে হয়
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? ইতিমধ্যে আমরা জানতে
পেরেছি। এখন আমরা জানবো আলট্রাসনোগ্রাম কি খালি পেটে করতে হয় এটি নির্ভর করে কোন
অঙ্গ বা এলাকার পরীক্ষা করা হচ্ছে তার ওপর। কিছু আলট্রাসনোগ্রাম খালি পেটে করতে
হয় আবার কিছু ক্ষেত্রে নিয়ম প্রযোজ্য নয়। মূলত পরীক্ষার আগে ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী খাদ্য পানিও গ্রহণের নিয়ম মেনে চলা উচিত।
অ্যাবডোমিনাল আল্ট্রাসনোগ্রাম সাধারণত খালি পেটে করতে হয়। পেটের ভেতরের অঙ্গ
যেমন লিভার গলব্লাডার প্যানক্রিয়াস এবং কিডনি পরীক্ষা করার সময় পেট খালি থাকা
জরুরী। খালি পেটে না থাকলে খাদ্য বা পানীয় কারণে গ্যাস্ট্রোইন টেস্ট স্টাইনাল
ট্রাক্ট ফুলে যেতে পারে যা সঠিকভাবে অঙ্গগুলোর ছবি তুলতে সমস্যা সৃষ্টি
করতে পারে। সাধারণত পরীক্ষার আগে ৮থেকে ১২ঘন্টা কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা
হয়।
গলব্লাডারে সমস্যা শনাক্ত করার সময় ও খালি পেটে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কারণ খাবারের
পর গল ব্লাডার সংকুচিত হয় এবং এই অবস্থায় সঠিক চিত্র পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
খাদ্য গ্রহণ বন্ধ রাখলে গলব্লাডার তার স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে এবং সঠিকভাবে
নির্ণয় করা সম্ভব হয়ে যায়। তবে প্রসবকালীন আলট্রাসনোগ্রাম বা গর্ভাবস্থার
আলট্রাসনোগ্রাম করার জন্য খালি পেটে থাকা প্রয়োজন হয় না। এছাড়া যদি কোন
ব্যক্তির কিডনি বা প্রোস্টেট পরীক্ষার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয় সে ক্ষেত্রে
খালি পেটে থাকার নিয়ম নেই।
আল্ট্রাসনোগ্রাফি খরচ কত ২০২৪
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? সবকিছুই আমাদের জানা হয়ে
গেছে তবে আমরা এখন জানবো আল্ট্রাসনোগ্রাফি খরচ কত ২০২৪। ২০১৪ সালের খরচ স্থান
হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং পরীক্ষার ধরন এর উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে
পারে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক আল্ট্রাসনোগ্রাফি এ সময়ের খরচ কত।
আরো পড়ুনঃ এলার্জি জাতীয় খাবার কোনগুলো
গর্ভকালীন আলট্রাসনোগ্রাফি প্রেগনেন্সি প্রায় এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা
পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অ্যাবডোমিনাল আলট্রাসনোগ্রাম খরচ সাধারণত ১৫০০ থেকে ৪
হাজার টাকার মধ্যে থাকে।
পেলভিক আলট্রাসনোগ্রাম ফরজ প্রায় ১২০০থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। থাইরয়েড
ব্রেস্ট বা অন্যান্য নির্দিষ্ট অঙ্গের আলট্রাসনোগ্রাম ১০০০ থেকে ৩ হাজার টাকা এর
মধ্যে খরচ হতে পারে।
খরচ মূলত নির্ভর করে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মান অবস্থান এবং ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির
আধুনিকতার উপর। কিছু উন্নত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খরচ বেশি হতে পারে। যদি আধুনিক
বা উচ্চ মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এইভাবে
আল্ট্রাসনোগ্রাফির প্রেগনেন্সি এর সময় খরচ হতে পারে।
আলট্রাসনোগ্রাম করতে কত সময় লাগে
আল্ট্রাসনোগ্রাম একটি দ্রুত এবং সাধারণত ব্যথা হীন প্রক্রিয়া যে সাধারণত ১৫ থেকে
৩০ মিনিট সময় নিয়ে থাকে। তবে সময়ের পরিমাণ নির্ভর করে কোন ধরনের
আলট্রাসনোগ্রাম করা হচ্ছে এবং কোন অঙ্গ বা কিছু পরীক্ষা করা হচ্ছে তার ওপর।
পরীক্ষার সময়কাল কিছু ক্ষেত্রে কম বা বেশি হতে পারে।
গর্ভকালীন প্রথমত আলট্রাসনোগ্রাম সাধারণত ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় নেয়।
- ভ্রুনের বিকাশ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন এবং প্লাসেন্টার অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য এ সময়ের প্রয়োজন হয়। যদি কোন জটিলতা থাকে যেমন জমজ সন্তান বা ভ্রুনের অন্য কোন অবস্থান অস্বাভাবিকতা হয় তাহলে কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে। পেটের অঙ্গের জন্য সাধারণত ১৫ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয়। কিডনি প্যানক্রিয়াস গলব্লাডার ইত্যাদি অবস্থান নির্ণয়ের জন্য।
- এ সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়। তবে যদি রোগীর শরীরে অতিরিক্ত ফ্ল্যাট বা গ্যাস থাকে তাহলে সঠিক চিত্র পেতে কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে। রক্তনালী এবং রক্ত প্রবাহ নির্ণয় ব্যবহৃত হয় ড্রপলার আলট্রাসনোগ্রাম। তাতে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। রক্ত প্রবাহের গতি এবং বাধার মাত্রা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একটি সময় সাপেক্ষ হতে পারে।
- সাধারণত আল্ট্রাসনোগ্রামের সময়কাল খুব বেশি দীর্ঘ হয়না এবং সেবা ক্ষেত্রে রোগীর জন্য কোন বিশেষ প্রস্তুতি প্রয়োজন হয় না। পরীক্ষা শেষ হলে রোগী তাৎক্ষণিকভাবে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারেন। এভাবে আলট্রাসনোগ্রামের সময়কাল নির্ভর করে পরীক্ষার ধরন জটিলতা এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর সাধারণত এটি দ্রুত এবং সহজ একটি প্রক্রিয়া
আল্ট্রাসনোগ্রাম কত প্রকার
গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম বোঝা এই বিষয় সম্পর্কে সব ধরনের তথ্য আমরা জানতে
পেরেছি। এখন আমরা জানবো আল্ট্রাসনোগ্রাম কত প্রকার। আলট্রাসনোগ্রাম বিভিন্ন ধরনের
হয় এবং এটি শরীরের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত প্রধানত
আলট্রাসনোগ্রামের কয়েকটি প্রকারভেদ দেয়া হলো।
- অ্যাবডোমিনাল আলট্রাসনোগ্রাম পেটের ভিতর অঙ্গ যেমন লিবার কিডনি প্যানক্রিয়াস গল ব্লাডার ইত্যাদি পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- পেলভিক আলট্রাসনোগ্রাম মহিলা ও পুরুষদের প্রজনন অঙ্গ এবং মুত্রাশয় সমস্যা নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত করা হয়।
- প্রেগনেন্সি আলট্রাসনোগ্রাম গর্ভবতী নারীদের ভ্রুনের বিকাশ এবং গর্ভকালীন বিভিন্ন পর্যায়ের অবস্থা নির্ণয়ের জন্য।
- থাইরয়েড আলট্রাসনোগ্রাম থাইরয়েড গ্র্যান্ডের আকার অস্বাভাবিকতা নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- বেস্ট আলট্রাসনোগ্রাম স্তনে টিউমার বা সিস্ট সনাক্ত করার জন্য।
- ডপলার আলট্রাসনোগ্রাম রক্তনালী ও রক্ত প্রভাব পরীক্ষা করতে বিশেষভাবে রক্ত না দেয় ব্লকের রক্ত প্রবাহের গতি নির্ধারণের জন্য।
- ট্রান্স ভ্যাজাইনাল আলট্রাসনোগ্রাম নারীদের ডিম্বাশয় ও পেলভিক অঙ্গের আরো পরিষ্কার ছবি পাওয়ার জন্য যেটি যোনির মাধ্যমে করা হয়।
- হৃদপিন্ডের গঠন ও কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করতে।
আমাদের শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বোঝার উপায় কি? এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করে
রান আল্ট্রাসনোগ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি
আলট্রাসনোগ্রাম করে থাকেন এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই
আর্টিকেল আপনার জন্যই। এখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু আলট্রাসনোগ্রাম সম্পর্কে
আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এখান থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং
তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।
কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে
থাকি।
পদ্মাম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url